আজ থেকে ঠিক ১ বছর আগের ঘটনা। ২১ শে জুলাইয়ের মঞ্চ। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চলছে তখন মামলার পর মামলা। ২১ জুলাই তৃণমূলের শহীদ সমাবেশের ঠিক একদিন পরেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। তিনি তখন তৃণমূলের মহাসচিব।
গতবছর তৃণমূলের ২১ জুলাই সমাবেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তিনিই! তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের পরদিন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে যান ইডি অফিসাররা। সেদিনই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় টাকার পাহাড়। অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ? কে-তিনি ? তখন এমনটাই প্রশ্ন উঠেছিল বাংলার আনাচে-কানাচে। আর দু-একদিনে এই নামটাই উঠে আসে বাংলার খবরের শিরোনামে। তিনি তৎকালীন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। পার্থর বাড়ি থেকেই চিরকূটের সূত্র ধরে অর্পিতার টালিগঞ্জে ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ইডি।সেখান থেকে উদ্ধার হয় হিসাব বহির্ভূত কোটি কোটি টাকা। ২৩ জুলাই, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ইডি’র হাতে গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যা নিসন্দেহে বঙ্গ রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দেওয়া ঘটনা। তার বর্ষপূর্তি হল।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থর গ্রেফতারিই ছিল প্রথম হেভিওয়েট গ্রেফতারি। এরপর একের পর এক ক্ষমতাশালী ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পরপর গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীরা। পার্থ চ্যাটার্জি থেকে তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। গ্রেফতার হয়েছেন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, SSC-র প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন সচিব অশোক সাহা, প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা। শুধু নেতা-মন্ত্রী আধিকারিকই নয়, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার জালে ধরা পড়েছে এজেন্ট-মিডলম্যানরাও। আর তারপর হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের পর গ্রেফতার হন উপেন বিশ্বাস বর্ণিত বাগদার চন্দন মণ্ডল ওরফে রঞ্জনও। তারপর ধরা পড়েন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। কিন্তু এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শেষ কোথায়, সুড়ঙ্গের শেষে আলো কোথায়, তার অপেক্ষায় কোটি কোটি বঙ্গবাসী।