Saturday, April 27, 2024
Homeকোচবিহারতুফানগঞ্জের চিলাখানায় তৃণমূল কর্মী হত্যাকাণ্ড মামলায় গ্রেপ্তার চার বিজেপি কর্মী

তুফানগঞ্জের চিলাখানায় তৃণমূল কর্মী হত্যাকাণ্ড মামলায় গ্রেপ্তার চার বিজেপি কর্মী

কোচবিহার:
তুফানগঞ্জের চিলাখানা এলাকায় তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী সাইনুল ইসলাম খুনের ঘটনায় তদন্তে নেমে ৪ জন কে গ্রেফতার করলো সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকরা। জানা গেছে, রবিবার ভোর রাতে চিলাখানার দাস পাড়া সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে সিবিআই। জানা যায়, ধৃতদের নাম ঈশ্বর দাস নামের দুই ব্যক্তিকে, গোবিন্দদাস ও মিহিড় চন্দ চন্দ্র নামে আরো দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ধৃতরা সকলেই স্থানীয় বিজেপি কর্মী হিসেবেই পরিচিত। ধৃতদের পরিবারের লোকেরা জানান, “সিবিআইয়ের আধিকারিকরা এসে তাদের ডেকে নিয়ে যায়”। তারা আরও জানান, “যেই অবস্থায় তারা বাড়িতে ছিল তাদের সেই অবস্থাতেই ডেকে নিয়ে যায়”। এদিকে “ সিবিআইয়ের তরফ থেকে ধৃতদের তুফানগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলা হলে সেখানে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে বিচারকের কাছে পুলিশি হেফাজতে চাওয়া হলে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে আদালত ধৃত ৪ জনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন” , বলে জানিয়েছেন আসামী পক্ষের আইনজীবী বিভাস সেন ইশোর। মৃত তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী সাইনুল ইসলামের পরিবারের লোকেরা বলেন, সাইনুল ইসলামের হত্যার ঘটনায় যারা জড়িত সিবিআই তাদের কঠোর শাস্তি দিক এই দাবি করেন তারা। ঘটনা প্রসঙ্গে তৃনমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা অন্যতম নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “ সিবিআই সঠিক কাজ করেছে। তারা যদি সঠিক ভাবে তদন্ত করে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে আমরা এটাই চাই”। এদিকে নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির কো- কনভেনার চিরঞ্জিত দাস বলেন , “ এই চারজনের মধ্যে এক- দুজন সক্রিয় বিজেপি কর্মী ছিল। যাদের গ্রেফতার করেছে তাদের থেকেই জানতে পারবে কে জড়িত। আমরা যতটা জানি এই ঘটনার সাথে তৃনমূল কংগ্রেসের লোকই জড়িত, এবার আসতে আসতে সেই মাথা গুলোর নাম আপনারা জানতে পারবেন”। প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দুদিন পর অর্থাৎ ৪ মে বিকেল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী সাইনুল ইসলাম। এরপরেই ৫ই মে ভোর নাগাদ চিলাখানা এলাকায় তার বাড়ি থেকে কিছুটা দুরেই একটি ক্ষেত থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারপরেই শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। এই ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলে তৃনমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব। যদিও বিজেপির তরফ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। অন্যদিকে, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেখানে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই মতো কোচবিহার জেলার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় গিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল এসে বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দেয়। তারপরেই কলকাতা হাইকোর্ট ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা গুলিকে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। তারপরেই সক্রিয় হয়ে ওঠে সিবিআই। তদন্ত করতে তড়িঘড়ি কোচবিহারে ছুটে আসে সিবিআই। জেলার দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙ্গা, সিতাইয়ের ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃতদের বাড়িতে দফায় দফায় কয়েকবার পৌঁছে গিয়ে তদন্ত করতে থাকে। তদন্ত প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গ্রেফতারি শুরু করে সিবিআই। গত সপ্তাহে দিনহাটা বিধানসভার পেটলা অঞ্চলে বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। এরপর রবিবার ভোর রাতে তৃনমূল কর্মী খুনের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments