কলকাতা, ২৮ মে: কেন যাচ্ছেন এভারেস্ট অভিযানে? ‘বিকজ ইট’জ দেয়ার, কারণ ওখানে ওটা আছে’, বলে গিয়েছিলেন হিমালয়ের কোলে চিরতরে হারিয়ে যাওয়া ব্রিটিশ পর্বতারোহী জর্জ ম্যালোরি।
অবশ্য তার কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে, হো হো চলো মাপি চলো এভারেস্টের উচ্চতা– রোমাঞ্চ-রহস্য-বিপদে ঠাসা, জীবন বাজি রাখা অভিযান। ১৯২৪ সালে এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান ম্যালোরি। ১৯৯৯ সালে বরফের রাজ্যে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। সঙ্গী অ্যান্ড্রু আরভিনের দেহ এখনও পাওয়া যায়নি। শেষমেশ ১৯৫৩-র ২৯ মে বেলা সাড়ে ১১ টায় শীর্ষভূমিতে পা রাখলেন নিউজি ল্যান্ডের নাগরিক এডমন্ড হিলারি ও নেপালি শেরপা তেনজিং নোরগে। দুনিয়ার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টে সেই প্রথম মানুষের পদচিহ্ন। কিন্তু খবরটা আড়াল করে রাখা হয় পাঁচদিন। এভারেস্টকে পদানত করার ঘোষণাটি হয় ৫৩-র ২ জুন লন্ডনে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অভিষেকের দিন সকালে। তার ৭০ বছর পর ব্রিটনের ৪০তম রাজা হিসাবে অভিষেক হয়েছে দ্বিতীয় এলিজাবেথের বড় ছেলে তৃতীয় চার্লসের। চলতি বছরের মে মাসে। সর্বোচ্চ শিখর জয়ের সত্তর বছরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে সেটাও।
এভারেস্ট অভিযান শুরু হয় গত শতকের বিশের দশকে, তিব্বতের দিক থেকে। ১৯২১ সালে ম্যালরি ও অন্য অভিযাত্রীদের প্রথম এভারেস্ট অভিযান! এই এভারেস্টেরই কুয়াশায় মিশেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশ, সেরা গণিতজ্ঞ, কলকাতার সার্ভে অফিসের বাবু রাধানাথ শিকদারের অসামান্য কৃতিত্ব। রাধানাথই দেখান, কাঞ্চনজঙ্ঘার পিছনে ‘পিক ১৫’ নামে যে শৃঙ্গটি, সেটাই সবচেয়ে উঁচু, ২৯০০২ ফুট। ইংরেজরা তবু রাধানাথকে কৃতিত্ব না দিয়ে ততদিনে প্রাক্তন সার্ভেয়ার জেনারেল জর্জ এভারেস্টের নামেই শিখরটির নাম দেয়। এ যেন উপনিবেশের প্রাক্তন প্রভুদের বঞ্চনা-সংস্কৃতিরই উত্তরাধিকার!
হিলারি-নোরগেদের পর অসংখ্য নারী-পুরুষের পদচিহ্ন পড়েছে সর্বোচ্চ শৃঙ্গে। এভারেস্টে পতাকা উড়িয়েছে একাধিক বাঙালি। কিন্তু ঠিক সত্তর বছর আগে কেমন ছিল হিলারিদের সেই অভিযান? কী বলছেন বাঙালি এভারেস্ট জয়ীরা? প্রতি বছর গুচ্ছ গুচ্ছ পর্বতারোহীর অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় এভারেস্ট জয় কি এখন পরিণত হয়েছে ‘গাইডেড ট্যুরে’? পাহাড় চূড়ায় আতঙ্কের আর এক নাম কি হয়ে উঠেছে এভারেস্ট-বর্জ্য? এ সব নিয়েই এবার TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ ‘শিখর জয়ের ৭০’। দেখুন ২৮ মে, রবিবার, রাত ১০টায়।