কোচবিহার,নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
অর্ঘ্য রায় প্রধান,পার্থ প্রতিম রায়, বিষ্ণু ব্রত বর্মন এরা সকলেই রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আরো একবার প্রমান করে দিল যোগ্যতা থাকলে তার জন্য রয়েছে কাজ করার জায়গা। এমনটাই উদাহরণ রয়েছে কোচবিহারে। কোচবিহার জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি হয়েছেন জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা খুব সাধারণ ঘরের এক যুবক। কমলেশ অধিকারী। উত্তরসূরিদের সাথে নিয়ে আগামী দিনে কোচবিহার জেলায় যুব তৃণমূল কে শক্তিশালী করার সংকল্প নিয়েছেন তিনি বলে প্রথম জানান সভাপতি।
কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা মহাকুমার ছোট্ট একটি গ্রাম উনিসবিশা, সেখানেই 1 প্রাথমিক শিক্ষকের ঘরে জন্ম কমলেশের। বাবা বিমল চন্দ্র অধিকারী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৎকালীন শাসকদল বামফ্রন্টের কাছে মাথা নত করেননি জন্য নানান বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছিল। তিনি আজ প্রয়াত। কমলেশ বাবু জানান, সেই সময় এক প্রকার এক ঘরে করে দেওয়া হয়েছিল তাদের। বাজার করতে গেলে বাজারের ব্যাগ ফেলে দেওয়া হতো, স্কুলে গেলে তার বাবাকে ঢুকতে দেওয়া হতো না। ক্রমাগত হুমকি এবং আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছিল তাদের। অনেকটা সেই সময়ই ডানপন্থী রাজনীতির দিকে ঝোঁক বাড়ে তার। ২০০৬ সাল, তখন কোচবিহার জেলা লাল দুর্গ সেই সময় মাথাভাঙা কলেজে মিষ্টভাষী কমলেশ ইউনিট এর দায়িত্ব পান। সহ-সভাপতি হিসেবে কাজ শুরু করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হয়ে। তারপর থেকে পিছন ঘুরে তাকাতে হয়নি। ২০০৭-০৮ সালে ছাত্র পরিষদের কন্টেস্টিং ক্যান্ডিডেট হয়ে সততার সঙ্গে লড়াই করেন কলেজ রাজনীতিতে। ২০০৯ থেকে ১৪ সাল পর্যন্ত মাথাভাঙ্গা বিধানসভার উনিসবিসা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি নির্বাচিত হন তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মন এর হাত ধরে। এরপর ২০১৯ সাল। গোটা কোচবিহার যেখানে বিজেপি সন্ত্রাস কবলিত হয়ে পরে লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে সেই সময় বাধ্য হয়ে পরিবার ছেড়ে আলাদা থাকতে হয়েছিল তাকে। আতঙ্কের প্রহর কাটতে সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর। ২০২১ সালের প্রথমদিকে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুনরায় সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় কমলেশ বাবু কে। যদিও বা ২০২১ এর ফলাফল আশানুরূপ হয়নি তবুও নিজের মাটি নিজের জায়গা ধরে রাখা হয়েছিল তার একমাত্র লক্ষ্য। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই তাকে নজরে নিয়ে আসে তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্তের। ১৬ই আগস্ট খেলা হবে দিবসে রাজ্য ঘোষণা করেন গ্রামের এই হতদরিদ্র পরিবারের ছেলেটি জেলার যুব তৃনমূলের দায়িত্ব সামাল দেবেন। এ যেন অবিশ্বাস্য।
কমলেশ বাবু বলেন, যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কোচবিহার জেলার যুব শক্তিকে আরো বেশি শক্তিশালী করার সংকল্প করেছেন তিনি। তার উত্তরসূরিরা যুব শক্তিকে যেভাবে সঙ্গবদ্ধ রাখার চেষ্টা করেছিলেন ঠিক সেভাবেই তিনি তার দায়িত্ব সামাল দেবেন। বিশেষ করে আসন্ন পৌর নির্বাচন এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহার জেলায় যুব শক্তি এক অনন্য ভূমিকা পালন করবে বলে দাবি করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্বকে যারা তার মতো কর্মীকে এত বড় সুযোগ দিয়েছেন।