Sunday, April 28, 2024
Homeকোচবিহারপ্রতি বোতল কোল্ড্রিংসের উপরে ৫ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা

প্রতি বোতল কোল্ড্রিংসের উপরে ৫ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা

কোচবিহারঃ 40 টাকার কোল্ড্রিংসের বোতল 45 টাকা, 95 টাকার বোতল 100 টাকায়, কুড়ি টাকার বোতল সেখানেও 25 টাকা। অর্থাৎ এমআরপির ওপরে অন্ততপক্ষে 5 টাকা করে বেশি। এটাই নাকি নিয়ম, কোচবিহারে প্রতি বোতল কোল্ড্রিংসের উপরে 5 টাকা করে বেশি নিচ্ছেন একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা। হচ্ছে ব্ল্যাক মানি। শুধু কোলড্রিংস কেন, দুধ দই এমনকি পনিরের ওপরেও বাড়তি ফ্রীজিং চার্জের নামে টাকা নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এমনটাই অভিযোগ। আপনি 5 টাকা বেশি দিচ্ছেন ঠিক, কিন্তু দিনের শেষে এই টাকার অংকটা ন্যূনতম 25000 এ গিয়ে পৌঁছাচ্ছে বলে দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের। এই বিপুল পরিমান ব্ল্যাকমানি যাচ্ছে কোথায়? কেন এতদিনেও উদাসীন ছিল জেলা প্রশাসন?

গরমের দিনে প্রত্যেকেই কোলড্রিংস ঠাণ্ডা অবস্থায় গ্রহণ করতে চান, আর সেখানে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর এর বক্তব্য এই নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ জমা পড়েনি তাদের দপ্তরে। তাই তারা কার্যত নিরুপায়। কোচবিহারের বিশিষ্ট সফট ড্রিংকসের হোলসেল বিক্রেতা সুজিত ধর জানাচ্ছেন, প্রতি কার্টুন বা পাইকারি ক্রয় মূল্যের ওপরে ন্যূনতম 10% করে লাভ থাকছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। তার কথায় ফ্রীজিং চার্জের নামে যে টাকা সংগ্রহ করা হয় তার সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি তথ্য দিয়ে বলেন, 2.25 লিটারের বোতল 95 টাকা করে বিক্রি হয়। একটি কার্টুনে নয়টি বোতল থাকে, কার্টুনের ক্রয় মূল্য 784 টাকা এবং বিক্রয় মূল্য 855 টাকা। অর্থাৎ নয়টি বোতলে লাভ যাচ্ছে 71 টাকা। 9 দিয়ে ভাগ করলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় বোতল প্রতি 7 টাকার কিছু বেশি।

প্রতি বোতল কোল্ড্রিংসের উপরে ৫ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা

আবার 750 মিলিলিটার বোতল যার বিক্রয় মূল্য 40 টাকা, কার্টুনএ চব্বিশটি বোতলের ক্রয় মূল্য 881 টাকা, বিক্রয় মূল্য 960 টাকা। বোতল প্রতি লাগছে 3.50 টাকা। ঠিক একইভাবে সম্প্রতি বহুল বিক্রয় এক লিটারের বোতল যার বিক্রয় মূল্য 50 টাকা, 15 বোতলের একটি কার্টুন এর ক্রয় মূল্য 680 টাকা, এবং বিক্রয় মূল্য 750 টাকা। সুতরাং বোতল পিছু লাভ 5 টাকার কাছাকাছি। সুতরাং ফ্রিজিং চার্জের নামে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া কোনোভাবেই খুচরা বিক্রেতাদের উচিত নয়। তিনি আরো জানান, এই গরমের মৌসুমে দৈনিক 300 কার্টুন দৈনিক এর ওপরে মাল বিক্রি হয়। ন্যূনতম 6 হাজার থেকে সাড়ে 6 হাজার বোতল প্রতিদিন বিক্রি হয় কোচবিহারে। দৈনিক যদি 5000 ও বিক্রি করা যায় 5 টাকা প্রতি বোতলে ব্ল্যাকমানি হিসেবে দৈনিক 25000 টাকা ব্ল্যাকমানি হচ্ছে। এর কোন অংশই সরকারের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না।

আমরা ইতিমধ্যেই পৌরসভার তরফ থেকে টাস্কফোর্স তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছি

এবার আসি নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দুধ দই এবং পনিরের বিষয়ে। সকালবেলা কেনাকাটা করলে কোন অতিরিক্ত দাম দিতে হয় না। কিন্তু দুপুর পার হয়ে গেলেই দুধের প্যাকেট পিছু তিন থেকে চার টাকা অতিরিক্ত, পনিরের প্যাকেটের পিছু নতুন 5 টাকা অতিরিক্ত বিক্রয় মূল্য ধার্য করা হয় ফ্রীজিং চার্জের নামে। আপনার দেওয়া 5 টাকা বুমেরাং হয়ে ব্যবসায়ীরা লাভ করে হাজার হাজার টাকা। যার কোন কর সরকারকে প্রদান করতে হয় না। এই নিয়ম কোচবিহার শহর সমগ্র উত্তরবঙ্গে রয়েছে। কোচবিহার হরিপাল চৌপতি তে অবস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, আমি কোনদিন ফ্রীজিং চার্জ নেই না। কিন্তু শোনা যায় আশেপাশের অনেক দোকানদার ফ্রিজিং চার্জ নেয়। সে ক্ষেত্রে কিছু কিছু সময় আমাদের অসুবিধা হয়। প্রশাসন এই বিষয়ে নজর দিলে বিশেষ উপকার হবে।

Read More –সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা, মাদ্রাসার ছাত্রদের একাদশ শ্রেণির ফ্রম না দেওয়ার অভিযোগ

কুচবিহার সদর মহকুমার শাসক তথা কোচবিহার পৌরসভার প্রশাসনিক আধিকারিক রাকিবুর রহমান জানান, এর আগে এই ধরনের অভিনব অভিযোগ আমাদের হাতে এসে কোনদিন পৌঁছয়নি। এই প্রথমবার আসলো। সত্যি বিষয়টি চিন্তার। দৈনিক 25000 টাকা যদি হিসেব হয় তাহলে মাস অন্ততপক্ষে কয়েক লক্ষ টাকার ব্ল্যাক মানি। আমরা ইতিমধ্যেই পৌরসভার তরফ থেকে টাস্কফোর্স তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছি, তারা কয়েক দিন মার্কেট সার্ভে করবে। যে সমস্ত দোকানদার এই ধরনের বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের অবশ্যই ছেড়ে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments