একদল সাংবাদিক ও নাট্যকর্মীকে জামাকাপড় খুলিয়ে, অন্তর্বাস পরে মধ্যপ্রদেশের এক পুলিশ স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হল। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি ভাইরাল হতেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয় নেটিজেনদের মধ্যে। ওই আটজন ব্যক্তি দেওয়ালের বিপরীতে সামনে হাত রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
ওই ছবিতে সনাক্ত করা গিয়েছে, এক স্থানীয় সাংবাদিক তথা ইউটিউবারকে, অভিযোগ যাঁকে হেনস্থা করা হয়, মারধর করা হয় এবং কিছু পুলিশ কর্মী দ্বারা তাঁর জামাকাপড় খোলানো হয়। সাংবাদিকের অপরাধ তিনি স্থানীয় বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে করা প্রতিবাদের খবর করতে গিয়েছিলেন। এই ঘটনাটি ঘটে মধ্যপ্রদেশে ২ এপ্রিল শনিবার। জানা গিয়েছে, ওই সাংবাদিক সিদ্ধি জেলায় নাট্যকর্মী নীরজ কুন্দারের গ্রেফতারের খবর করতে গিয়েছিলেন। স্থানীয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক কেদারনাথ শুক্লা এবং তাঁর ছেলে গুরু দত্ত সম্পর্কে তিনি ভুয়ো ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
সাংবাদিক কনিষ্ক তিওয়ারি দাবি করেছেন যে তাঁকে এবং তাঁর ক্যামেরা ম্যানকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁদের বিরুদ্ধে অনধিকার এবং জনশান্তি বিঘ্নিত করা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। পুলিশ সাংবাদিককে প্রশ্ন করেন, ‘বিধায়কের বিরুদ্ধে খবর করছিলেন কেন?’ তিওয়ারি এও দাবি করেন যে তিনি সহ ছবিতে থাকা অন্যান্যদের পুলিশ হেফাজতে ১৮ ঘণ্টা রাখা হয়। তিওয়ারির অভিযোগ, ‘২ এপ্রিল রাত ৮টা নাগাদ পুলিশ আমাদের হেফাজতে নেয় এবং ৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ আমাদের ছেড়ে দেয়।’
এক প্রতিবাদকারী জানিয়েছেন যে একাধিক সমাজ কর্মী ও নাট্যশিল্পী কুন্দারের গ্রেফতার হওয়ার জন্য প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন কিন্তু রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া শুরু করতেই পুলিশ তাঁদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে দেয়। তিওয়ারি দাবি করেন যে এই ছবিটি পুলিশ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার অভিষেক সিং তুলেছেন। তিওয়ারি বলেন, ‘হুমকি দেন আমরা যদি এই খবরটা চালাই তবে আমাদের নগ্ন করে শহরে ঘোরানো হবে। পুলিশ নিজেই এই ছবিটি ভাইরাল করে দেয়। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
কণিষ্ক জানান, নীরজের গ্রেফতারির সম্পর্কে জানতেই তিনি থানায় গিয়েছিলেন। তারপরেই তাঁদের উপর অত্যাচার চালানো হয়। তাঁর আরও দাবি, রাজনীতিক এবং পুলিস কর্তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে তিনি লেখালেখি করেন বলে পুলিস এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এই ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছেন এবং দোষী পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন।