আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রথমদিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে, শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হলেও বাংলা প্রশ্নপত্রে ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী’ নিয়ে প্রবন্ধ রচনার প্রশ্নটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দেখা গিয়েছে, প্রবন্ধ রচনার জন্য দেওয়া সূত্রগুলির মধ্যে রয়েছে, ‘উচ্চশিক্ষা : প্রেসিডেন্সি কলেজ, আইএএস উত্তীর্ণ’। আর তা নজরে আসতেই সমালোচনায় মুখর হয়েছে শিক্ষক মহল। কারণ, আইএএস নয়, ১৯২০ সালে সিভিল সার্ভিস অর্থাৎ আইসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। এ বিষয়ে সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা সম্ভবত ছাপার ভুল। তখন আইএএস ছিলই না। তবে, পরীক্ষার্থীরা আইএএস লিখুক বা আইসিএস তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য নম্বরই পাবেন। কারণ, আমাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তো পরীক্ষার্থীরা লিখছেন। সেই তথ্যেই ভুল ছিল।’’ এবছর ২৩৪৯টি পরীক্ষাকেন্দ্রে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন প্রায় ৮ লক্ষ ৫৫ হাজার পরীক্ষার্থী। প্রথম থেকেই প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল রুখতে ব্যাপক কড়াকড়ি ব্যবস্থা ছিল।
প্রবেশপথে ব্যাগ চেকিং করে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়। স্পর্শকাতর ২০৬টি পরীক্ষাকেন্দ্রে হাতে ধরা মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিং করা হয়। অতি স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলিতে ব্যবহার করা হয় আরএফডি যন্ত্রের। এদিন পরীক্ষা চলাকালীন আরএফডি নিয়ে কলকাতার সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল পরিদর্শনে আসেন সংসদ সভাপতি। সঙ্গে ছিলেন সংসদের সচিব তাপস মুখোপাধ্যায়। চিরঞ্জীববাবু বলেন, ‘‘খুব ছোট আকারে পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে প্রথমবার আরএফডি ব্যবহার করেছি। এবার অত্যন্ত স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতেই এর ব্যবহার করা হয়েছে।’’ আরএফডি ব্যবহারে খুশি অভিভাবকরাও। পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র সহজ ছিল। একটি প্রশ্নপত্র ও একটিই উত্তরপত্রে পরীক্ষা দিতে তাঁদের কোনও সমস্যা হয়নি। তবে, এবছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা অতিমারী আবহে ২০২১ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারেননি। ফলে, নিজের স্কুলের বাইরে গিয়ে এবারই প্রথম বড় পরীক্ষা দিচ্ছেন তাঁরা।
তাই টেনশনে ছিলেন বেশ কিছু পরীক্ষার্থী। যদিও পরীক্ষা দিতে দিতে টেনশন উধাও হয়ে যায় তাঁদের। এদিন অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে সমস্যা পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্যে কোথাও সিভিক ভলান্টিয়ার, কোথাও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এগিয়ে আসেন। যেমন, হুগলিতে উত্তরপাড়া ইউনিয়ন গার্লস হাই স্কুলে অ্যাডমিট কার্ড ভুলে পরীক্ষা দিতে চলে এসেছিলেন এক ছাত্র। নিজের বাইক ছুটিয়ে বাড়ি থেকে তাঁর অ্যাডমিট কার্ড এনে দেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। স্কুল থেকে অ্যাডমিট কার্ড পাননি বনগাঁর এক ছাত্র। সোমবার বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দ্বারস্থ হলে তিনি ওইদিনই রাতের মধ্যে ওই ছাত্রের অ্যাডমিট কার্ড আনিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষার দিনে অসুস্থ হয়ে বা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন একাধিক ছাত্র-ছাত্রী। তাঁদের কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দিলেও, কয়েকজন পরীক্ষা দিতে পারেননি।