বহরমপুরে কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরী খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি তুলল নিহতের পরিবার। সোমবার মালদহ বহরমপুর আসেন সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী। বহরমপুর থানা এবং পুরসভায় যান তিনি। স্বাধীন চৌধুরীর কথায়, ‘মেয়ের সঙ্গে বছর দেড়েক ধরে কোনও সম্পর্ক ছিল না অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীর। নিজেকে বাঁচাতে সুশান্ত চৌধুরী আমাদের দোষারোপ করছে। পুরনো ছবি ব্যবহার করে সাজার হাত থেকে রেহাই পেতে চাইছে সুশান্ত। ওর ফাঁসি চাই আমি।’ বহরমপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।
২ মে রাতে বহরমপুরের গোরাবাজারে খুন হন বহরমপুর গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী। তিনি স্থানীয় একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করতেন। তাঁর সঙ্গে ধৃত সুশান্তর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে পুলিস জানতে পারে। সম্প্রতি কোনও কারণে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য ঘটার জেরে ওই ঘটনা। পুলিস সূত্রের খবর, ওই রাতে স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবক দূর থেকে সুতপাকে কোপাতে দেখেন। দু-একজন কাছে যাওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু তাদের হুমকি দেয় সুশান্ত।
সেই ভয়ে তাঁরা পিছিয়ে আসেন। সুতপাকে বারবার ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে সে। এমনকি রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর পেটে একাধিকবার লাথিও মেরেছে। সুশান্ত পকেট থেকে মোবাইল বের করে তা ঘাঁটতে ঘাঁটতে একটা পাঁচিল টপকে পালায়। স্থানীয় কয়েকজনই দূর থেকে গোটা ঘটনার একটি ভিডিয়ো করে। তাতেই ওই নৃশংস দৃশ্য দেখা গিয়েছে। রাতেই সে ক্যাব ভাড়া করে মালদহে যাচ্ছিল। পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে, সে একাধিকবার ক্যাব পাল্টেছে।
পুলিস জানিয়েছে, সুশান্ত তেলুগু সিনেমা ‘পেপার বয়’ দেখতে অনুরোধ করেছিলেন প্রেমিকাকে। সুতপার পরিবারের লোকজন যে তাদের ভালোবাসায় কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই ধরনের পোস্টও শেয়ার করেছেন মালদার ওই যুবক। ‘ভালোবেসে ভুল করেছিল সে, সুখের বলি হয়েছে নিজেই’, সুশান্তর ফেসবুকে এ ধরনের বিভিন্ন পোস্ট উঠে এসেছে। তাই প্রতিহিংসা থেকেই সুতপাকে খুন করেছে সুশান্ত, এমনটাই অনুমান পুলিসের।