তুফানগঞ্জ:
“দীর্ঘদিনের সমস্যা রাস্তা তৈরি হয়নি, একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।” – স্থানীয় বাসিন্দা অনিমা দাস।
“জল নিকাশি ব্যবস্থা একেবারেই নেই এলাকায়, ড্রেনের দাবি দীর্ঘদিনের।”- স্থানীয় বাসিন্দা পূর্ণিমা কুন্ডু।
“ভোট আছে ভোট যায়, ভোটের সময় নেতাদের কাছে আমরা আত্মীয় হয়ে উঠি, ভোট চলে গেলে আর কেউ খোঁজ নেয় না। রাস্তায় আলো নেই, বিরোধীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশের বাঁশঝাড়ে মদ মাতালের আড্ডা। দিনের বেলাতেও ভয় লাগে বাড়িতে বাচ্চারা রয়েছে।” – স্থানীয় বাসিন্দা শীমা কুন্ডু। রঞ্জনা সিনহা।
এরকম ভূরি ভূরি অভিযোগ, অভিযোগ তুফানগঞ্জ পৌর এলাকার 5 নম্বর ওয়ার্ডের মদনমোহন পাড়ায়। দিনের বেলা তো এখানে রাজত্ব করে আতঙ্ক, রাত বাড়লে তো কথাই নেই। 2015 সালে তৃণমূল কংগ্রেস তুফানগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় 10 বার বিভিন্নভাবে এলাকার 300 মিটার রাস্তা এবং তার সঙ্গে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। পৌরসভার মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও কেটে গেছে আরো দুই বছর, এখনো কোন সুরাহা হয়নি এলাকার। এলাকাবাসীদের স্পষ্ট কথায়, ভোটের সময় নেতারা আসেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোট ফুরিয়ে গেলেই নেই। সবথেকে বড় সমস্যা রাস্তা এবং আলোর পাশাপাশি জল নিকাশি ব্যবস্থার। এলাকায় কোনো নিকাশি নালা নেই। অভিযোগ, আবেদন জানিয়ে ও পাওয়া যায়নি শৌচালয়। সামনেই পৌরসভার ভোট, তুফানগঞ্জ পুরসভার ক্ষেত্রে 5 নম্বর ওয়ার্ডের অনুন্নয়ন কি হাতিয়ার হয়ে উঠবে বিরোধীদলের কাছে??
ইতিমধ্যেই তুফানগঞ্জ মহকুমার জাতীয় কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী শুভময় সরকার মন্তব্য করে বলেন, 2015 সালের পর দুটি বিধানসভা নির্বাচন একটি লোকসভা নির্বাচন হয়ে গেছে, তার পরেও এলাকার উন্নয়ন হয়নি। সাধারণ মানুষ এখনো অনুন্নয়নের অন্ধকারে জর্জরিত। শুধু পাঁচ নাম্বার ওয়ার্ড ছাড়াও অন্যান্য আরো 11 টি ওয়ার্ডে ঘুরলে পরে এই অনুন্নয়ন চোখে পড়বে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌরবোর্ড। মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে চায়না তা বিগত দিনের নির্বাচনগুলি থেকেই পরিষ্কার, স্বচ্ছ পরিষ্কার নির্বাচন হলে মানুষ অবশ্যই পরিবর্তনের সাপেক্ষে ভোট দেবে।
যদিও বা তুফানগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান পৌর প্রশাসক ইন্দ্রজিৎ ধরে বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পরে আমি এলাকায় গিয়েছিলাম। সত্যি মানুষ সমস্যায় রয়েছে। পৌর নির্বাচনের পরে অবশ্যই তাদের সমস্যা সমাধানের প্রথম চেষ্টা থাকবে। একই সাথে এলাকায় সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম নিয়ে ইতিমধ্যেই তুফানগঞ্জ থানায় কথা হয়েছে, এলাকায় পুলিশি টহলের আবেদন জানানো হয়েছে।
তবে পৌরসভার 5 বছর মেয়াদ কালীন সময় এবং পরবর্তীতে আরো দুই বছর প্রশাসক মেয়াদকালীন সময়েও কেন সাধারণ মানুষের দাবি পূরণ হলো না তা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তুফানগঞ্জ পুরসভার একাধিক উন্নয়ন ছবির পাশাপাশি এ এক নগ্ন চিত্র। আগামী পৌর নির্বাচনে পাঁচ নাম্বার ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি শাসক দল তৃণমূল এর ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে উঠবে কিনা সেটাই এখন দেখার।