Monday, May 13, 2024
Homeদক্ষিণ দিনাজপুরভোটের উত্তাপ কমলেও দক্ষিণ দিনাজপুর জুড়ে কমার লক্ষন নেই তাপ প্রবাহের

ভোটের উত্তাপ কমলেও দক্ষিণ দিনাজপুর জুড়ে কমার লক্ষন নেই তাপ প্রবাহের

সমগ্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে চলছে প্রচন্ড তাপপ্রবাহ। দিনের বেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুই ছুই করছে। আর এই গরমে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দিন-দিন বাড়ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বালুরঘাট শহরের রাস্তাঘাট শুনশান হয়ে পড়ছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বেরোচ্ছেন না। এই প্রচন্ড গরমে সানস্ট্রোকের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। স্থানীয় আবহাওয়াবিদরাও কবে বৃষ্টি হবে তার কোন উত্তর দিতে পারেননি। তবে পরিস্থিতি এরকম থাকলে মানুষের সমস্যা যে বাস্তবিকই বাড়বে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
বালুরঘাটের চিকিৎসক শান্তি গোপাল মন্ডল খুব প্রয়োজন না পড়লে মানুষজনকে বাইরে দিনের বেলায় বেরোতে বারণ করছেন।
তিনি বলেন, “এই গরমে সবচেয়ে যেটা সমস্যা হয় সেটা হলো ডিহাইড্রেশনের সমস্যা অর্থাৎ জল শূন্যতা। নিয়মিতভাবে জল পান করা একান্ত দরকার। এর সাথে সাথে ডাবের জল, নুন-চিনি স্যালাইনের জল ইত্যাদি সময়মতো এবং নিয়মিত পান করলে শরীরে জলের মাত্রা ঠিকঠাক থাকবে। আমাদেরকে দেখতে হবে ইউরিনের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা? যদি ইউরিন কম হয় তাহলে বুঝতে হবে শরীরের জলশূন্যতা হচ্ছে। সেটাকে ঠিক রাখার জন্য জলের মাত্রা ঠিকঠাক করা ভীষণ দরকার। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোবে না। এখন যদিও স্কুল বন্ধ চলছে তাই একপ্রকার বাঁচোয়া। বাইরে একান্তই বেরোতে গেলে ছাতা, টুপি এবং দিনের বেলা গা-ঢাকা পোশাক পড়ে বেরোনোই বাঞ্ছনীয়।”
বালুরঘাটের স্থানীয় আইনজীবী বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা এইরকম গরম বালুরঘাটে কখনো দেখিনি। ৪০ ডিগ্রি এবং তার বেশি তাপমাত্রা বালুরঘাট শহরকে আক্রান্ত করেছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ। স্থানীয় আবহাওয়াবিদদের মতে এই তাপমাত্রা নাকি আরো বাড়তে পারে। এবছর কালবৈশাখীও হয়নি এবং বৃষ্টিপাতের সংকট চলছে। আমরা আগে জানতাম বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়াতে এরকম তীব্র তাপদাহ চলে। বালুরঘাট তথা দক্ষিণ দিনাজপুরে অতীতে কিন্তু আমরা এরকম কখনো দেখিনি। ফাল্গুন-চৈত্র মাস শেষ হয়ে গেল। বৈশাখ মাস শেষ হতে যাচ্ছে। অথচ বৃষ্টির দেখা নেই। এ এক অসহনীয় পরিস্থিতি। গ্রামের লোকেরা আদালতে খুব প্রয়োজন ছাড়া আসছে না। তাছাড়া একটা নির্বাচন গেল সেই জন্য লোকের সংখ্যা কম।”
বালুরঘাটের পরিবেশবিদ তুহিন শুভ্র মন্ডল জানালেন, “এ কথা ঠিক যে সারা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে তীব্র দাবদাহ চলছে যা আগে কখনো আমরা দেখিনি। লু বাতাস বইছে। বাতাসে গরম বাড়ছে। এর জন্য আমরা নিজেরাই হয়তো কিছুটা দায়ী। গাছপালা নির্বিচারে কেটে বাড়ি ঘর তৈরি করা হচ্ছে। জলাভূমি নির্বিচারে বুঝিয়ে উঠছে বহুতল। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপর। তাছাড়া শহর জুড়ে এসির পরিমাণ বাড়ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পরিবেশের উপর এসে পড়ছে। বিপদ থেকে বাঁচার জন্য আমাদের তাই উচিত গাছ লাগানো। গাছ লাগালে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে যেমন তেমনি বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক ভাবে হবে। কারণ যত দিন যাচ্ছে গাছপালা না থাকার জন্য বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিন্তু কমছে। তাই আমাদের উচিত পরিবেশের বন্ধু হওয়া। পরিবেশের বন্ধু না হলে পরিবেশের ক্ষতিকারক প্রভাব আমাদের সবার উপরই এসে পড়বে।”
স্থানীয় বালুরঘাটের ডাবের দোকান বা ঠান্ডা পানিয়ের দোকানে এখন লোকেদের ভিড় বাড়ছে। সুযোগ পেলেই মানুষজন ডাব কিনে খাচ্ছে। এখন ডাবের দামও প্রায় আকাশছোঁয়া। এক একটি বড় ডাব ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া স্থানীয় মিষ্টির দোকানে লস্যি, আইসক্রিম ও বরফ বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় বাজার ঘাট দিনের বেলা প্রায় জনশূন্য থাকছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments