সুদীপ্ত দাস, বারাসাত : উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগর রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিলো রাজ্য প্রশাসন। হাসপাতালকে নতুন রূপে সাজাতে উদ্যোগ নিলেন অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে করোনা মহামারি পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর অশোকনগর রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল কভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছিল। ২০২২ সালে পুনরায় সাধারণ হাসপাতালের রূপে ফিরিয়ে আনা হয় হাসপাতালের পরিষেবা। কিন্তু এরপর থেকেই হাসপাতালের পরিকাঠামোয় ত্রুটি লক্ষ্য করেন চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষেরা। তারা অভিযোগ তোলেন, যে পরিষেবা অন্যান্য হাসপাতালে রয়েছে তার সেই সুবিধা এই হাসপাতালে নেই। দীর্ঘদিন তাদের দাবি ছিল, হাসপাতালের পরিষেবা অন্যান্য হাসপাতালে তুলনায় উন্নত নয় অর্থাৎ, ডিজিটাল এক্স রে মেশিন, সিটি স্ক্যান মেশিন ও আইসিসিইউ ইউনিট পরিষেবা ছিল না। এইসমস্ত পরিষেবা পেতে হলে যেতে হতো বারাসাত গভঃমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অশোকনগর বিধানসভা এলাকায় ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৫৭ হাজারেরও বেশি, এলাকায় ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত সহ রয়েছে একটি পৌরসভা। এত সংখ্যক মানুষকে সেই সমস্যার মধ্যে যাতে না পড়তে হয় ও তাদের চাহিদা পূরণের লক্ষ্য নিয়েছেন অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী।
এই বিষয়টি সামনে আসার পর সাধারণ মানুষ তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন। ভুরুকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা হিমেশ বড়াই জানান, “গরিব মানুষ আমরা, সিটি স্ক্যান করাতে দূরে যেতে হয়। অনেক পয়সা খরচ হয়ে যায় তাতে। যদি এই হাসপাতালেই আমরা এই পরিষেবাগুলো পাই, তাহলে বিনা পয়সায় আমরা সেই পরিষেবা পাবো। অন্য জায়গায় আমরা টাকা খরচ করতে হবে না, তাতে সুবিধাই হবে।” কল্যাণগড় পৌরসভার বাসিন্দা পল্লবী রায় বলেন, “সুবিধা তো অনেকটাই হবে। যেহেতু সরকারি হাসপাতাল তাই বিনামূল্যে মানুষ সিটি স্ক্যান করাতে পারবেন। ডিজিটাল এক্স রে করতে বারাসাত গভঃমেন্ট হাসপাতালে যেতে হতো, তাতে খরচ হতো যাতায়াতের, সেই খরচ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।”
চলতি বিধানসভার বাদল অধিবেশনে বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী হাসপাতাল পরিষেবার উন্নয়নের কথা তোলেন, সেই কথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছলে হাসপাতাল পরিষেবা উন্নয়নে যে যে সরঞ্জাম প্রয়োজন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তা যত শীঘ্রই সম্ভব হাসপাতালে পৌঁছে দেবেন বলে জানান রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।
এই বিষয়ে অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, “বিধানসভার বাদল অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে আমি আমার এলাকার হাসপাতালের এই সমস্যার কথা জানাই। পরবর্তীতে সেই কথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছলে তিনি নিজে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন হাসপাতাল সম্পর্কে। এরপর রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং জানান যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম তিনি পাঠিয়ে দেবেন অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।” একইসঙ্গে বিধায়ক জানান, “কভিড হাসপাতাল হিসেবে এই হাসপাতাল গড়ে ওঠার পর রাজ্যের বাকি হাসপাতালে যে উন্নয়ন হয়েছে তা এখানে হয়নি। তবে এই সমস্যা বৃহৎ কিছু না, কয়েকদিনের মধ্যেই অশোকনগর বিধানসভার বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।”