বানারহাট: তাসের ঘরের মতোই যেনো বানারহাটে ভেঙে পড়ছে তৃণমূল। ৭২ ঘণ্টায় প্রধান পঞ্চায়েত সহ পাঁচ শতাধিক কর্মী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে। বাদ পড়ল না সরকারি কর্মচারীও। প্রকাশ্য সভায় রাজ্যের প্রধান বিরোধীদলের হাত শক্ত করতে পদ্মে ঝান্ডা হাতে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন বন দফতরের একবিট অফিসার।
পঞ্চায়েত, প্রধান, মন্ত্রী, বিধায়কদের দলবদলের ঘটনা রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। এবারে বন দফতরের এক বিট অফিসার দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন। ঘটনায় রীতিমত হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকায়।বিট অফিসারের এভাবে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক দলের পতাকা হাতে নিয়ে যোগদান করায় রীতিমত হতবাক সকলে।
বিজেপিতে যোগদানের পর দলগাঁও বন্যপ্রাণী শাখার বিট অফিসার জগন্নাথ সাহা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আর মাত্র এক বছর আমার চাকরি রয়েছে। এই সময় বনবিভাগ আমাকে অন্য কোন দপ্তর না দিয়ে বন্যপ্রাণ শাখায় বদলি দেওয়ায় ও হাতি তাড়ানোর কাজে যুক্ত রাখায় আমি প্রকাশ্যে বিজেপিতে যোগদান করলাম।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে সাঁকোয়াঝোড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গয়েরকাটার প্রধানপাড়া এলাকায় শতাধিক কর্মীর তৃণমূল ছেড়ে সিপিআই (এম)- এ যোগদান। এরপর সোমবার সকালে জলপাইগুড়ি গিয়ে শালবারি -২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সহ একঝাঁক কর্মীর বিজেপিতে যোগদান। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না ফের নাথুয়া এলাকায় ব্যাপক তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ঘাসফুল ছাড়ার হিড়িক লক্ষ্য করা গেলো। এদিক বন দফতরের বিট অফিসার ছাড়াও প্রায় আড়াইশো পরিবার তৃণমূল ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপিতে যোগদান করেন বলেই দাবি পদ্ম নেতাদের।
এদিকের এই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির সভাপতি বাপি গোস্বামী ছাড়াও জেলা ও ব্লক স্তরের অন্যান্য নেতৃত্বরা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূল যে ডুয়ার্সে মাটি হারাচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই পরিষ্কার এদিকের যোগদান অনুষ্ঠানের ছবি দেখেই। এদিকে নিজেদের মাটি হারালেও প্রকাশ্যে ক্যামেরার সামনে কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না শাসকদলের নেতারা।
একদিকে বিজেপির ডিসেম্বর জুজু, অন্যদিকে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এভাবে তাসের ঘরের মত তৃণমূলকে ভেঙে পড়তে দেখে মনোবল হারাচ্ছে কর্মীরা।
তাহেল বিজেপি নেতাদের কথায় ডিসেম্বরে যে ব্যাপক পরিবর্তন হবে সেই ইঙ্গিত কি দিচ্ছে, ডুয়ার্সের শাসকদলের এই ভাঙ্গন!
একই দিনে মালবাজার এলাকায় তৃণমূলের শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকরার কুশপুতুল পুড়িয়েছে বিক্ষোভ আদিবাসী সংঘটনের। পাল্টা তৃণমূল কাউন্সিলরদের বিজেপির চর বলে আখ্যা দিলেন শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সভাপতি। একদিকে যখন গোষ্ঠী কোন্দল মাথা চাড়া দিচ্ছে জেলায় সামাল দিয়ে হিমশিম খাচ্ছে জেলা নেতৃত্ব, অন্যদিকে তৃণমূলের ঘর ভেঙ্গে চৌচির হতে দেখছেন।