Monday, May 6, 2024
Homeময়নাগুড়িপ্রয়াত হলেন বিশিষ্ট ভাওয়াইয়া শিল্পী তথা ময়নাগুড়ির প্রথম বেতার শিল্পী প্রেমানন্দ রায়

প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট ভাওয়াইয়া শিল্পী তথা ময়নাগুড়ির প্রথম বেতার শিল্পী প্রেমানন্দ রায়

ময়নাগুড়ি, ৩১ জুলাই : সোমবার সকালে প্রয়াত হলেন ময়নাগুড়ি ব্লকের প্রথম বেতার শিল্পী তথা বিশিষ্ট ভাওয়াইয়া শিল্পী প্রেমানন্দ রায়। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ময়নাগুড়ি ব্লকের খাগড়াবাড়ি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া এলাকার নিজ বাস ভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। শিল্পীর এই প্রয়াণে গভীর ভাবে শোকস্তব্ধ গোটা শিল্পী মহল। ছোট বেলা থেকেই সঙ্গীত চর্চা করতেন প্রেমানন্দ রায়। গান, বাদ্য যন্ত্রের অভ্যাস করতেন তিনি। ভাওয়াইয়া, লোকগীতি, পল্লীগীতি, বাউল গান করে এক সময় মঞ্চ কাঁপিয়ে ছিলেন প্রেমানন্দ রায়। তিনি একাধারে যেমন সঙ্গীত শিল্পী তেমনি একজন অভিনেতা এবং সঙ্গীত শিক্ষক। ময়নাগুড়ির টেকাটুলিতে প্রেমানন্দ বাবুর উদ্যোগে একটি স্কুল খোলা হয়। সেখানে বিনামূল্যে ছাত্র ছাত্রীরা গান চর্চা করতে পারতো। দীর্ঘ ২৫ বছর সেই স্কুল চালানোর পর পরবর্তীতে সেভাবে আগ্রহ না দেখানোর দরুন স্কুল প্রায় বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। তবে প্রেমানন্দ বাবুর বাড়িতে অনেক ছাত্র ছাত্রী আসেন গান শেখার জন্য , বাদ্য যন্ত্র শেখার জন্য। এই প্রেমানন্দ বাবুই ছিলেন ময়নাগুড়ি ব্লকের প্রথম বেতার শিল্পী। সঙ্গীত চর্চার পাশাপাশি এক সময় তিনি অভিনয় জগতে পা দিয়েছিলেন। তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেতাও বটে। যাত্রা দল, বিশহরা গানের দল, চোর চূর্ণী, পালাটিয়ার দলে অভিনয় করতেন। এই সমস্ত কাজের জন্য বিভিন্ন সংগঠন থেকে বিশেষ সম্মান পেয়েছেন তিনি। প্রেমানন্দ রায় ছিলেন একজন বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী। অভিনয়, সঙ্গীত চর্চা, বাদ্য যন্ত্রে পারদর্শী, সঙ্গীত শিক্ষক তো ছিলেনই এর সাথে সাথে তিনি একজন সংগ্রাহক। বাড়িতেই সংগ্রহ করে রেখেছেন হারিয়ে যাওয়া বেশ কিছু জিনিস। জমিদারের বাড়িতে থাকা সন্দুক, চট তৈরির উপকরন সহ অনেক কিছুই। যা আজ দেখতে পাওয়া দুষ্কর। সেই সমস্ত জিনিস তিনি বাড়িতে সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। এই ধরনের একজন গুণী শিল্পীর প্রয়াণ হওয়ায় হতবাক শিল্পী মহল। জানা যায়, মৃত্যুকালে প্রেমানন্দ বাবু বাড়িতে রেখে গেলেন তার স্ত্রী, এক ছেলে, ছেলে বউ, দুই নাতি ও এক নাতনি। এই বিষয়ে প্রেমানন্দ রায়ের ছেলে দিলীপ রায় বলেন, " বাবার দীর্ঘদিন থেকেই হাই প্রেসার ছিল। গত চারদিন থেকে খাওয়া দাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। আজ সকালে মা চা মুড়ি দিলে খাওয়া দাওয়া করেন। খেয়ে দেয়ে বাড়িতেই একটু হাঁটাচলা করে ঘুমাতে যান। এরপরেই পরে ঘরে গিয়ে জানতে পারি বাবা আর নেই।"

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments