রাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপির নেতা-নেত্রীদের দল বদলকে নিয়ে তীব্র কটাক্ষ সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিমের। এটাকে পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউশন বা রাজনৈতিক বেশ্যাবৃত্তি বলে কটাক্ষ করলেন সেলিম। সোমবার সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সদর দপ্তরে এক সাংবাদিক বৈঠকে মহম্মদ সেলিম বলেন, রাজ্যে খুনোখুনির রাজনীতি মুকুল রায়, শুভেন্দু, মমতা একসাথে মিলে শুরু করেছে। এ রাজ্যে প্রতিদিন দলবদল হচ্ছে। শুভেন্দুর বাড়ির লোকেরা তৃণমূলের বিধায়ক, তাই কিসের লুকোচুরি। এখন চোরের মাল টাকা উদ্ধার হচ্ছে, এখন শুভেন্দুর ঘরে ঢুকলে দেখা যাবে তৃণমূলের সাংসদ আছে বিজেপির নামে চালিয়ে যাচ্ছে। অথবা বিজেপির সাংসদ তৃণমূলের নামে চালিয়ে যাচ্ছে। এটা রাজনীতি না, এগুলিকে বলে পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউশন বা রাজনৈতিক বেশ্যাবৃত্তি। তিনি বলেন, বামপন্থীরা মানুষের কাজের অধিকার নিয়ে, শিক্ষার অধিকার নিয়ে, রাজ্যের সমস্যা, দেশের সমস্যা নিয়ে লড়াই করে, রাজনৈতিক বেশ্যাবৃত্তি করে না।
সি আই টি ইউ কোচবিহার জেলা অষ্টম সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখতে রবিবার দিনহাটা আসেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সোমবার দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলী ও জেলা কমিটির সভায় যোগ দেন তিনি। এর মাঝেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মহঃ সেলিম। এই সাংবাদিক বৈঠকে তার সাথে ছিলেন দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়, সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার প্রমূখ।
এদিন মহঃ সেলিম বলেন, রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের সময় দৃঢ়তার সাথে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল একটি শিশুও শিক্ষাঙ্গনের বাইরে থাকবে না। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশ এবং এই রাজ্যে শিক্ষার অঙ্গনের বাইরে ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শিক্ষাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে আগে চিকিৎসা পেতেন প্রায় ৭৬ শতাংশ মানুষ। আর এই মুহূর্তে কেন্দ্র বলছে আয়ুষ্মান ভারত, আর রাজ্য শোনাচ্ছে স্বাস্থ্য সাথীর গল্প। আর অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, যে কোন অসুখ হলেই মানুষ নিজের পকেটের টাকা খরচ করে কিংবা জমি বাড়ি বন্ধক রেখে বাইরে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এই দুই সরকার শুধুই বিজ্ঞাপন করছে।
তিনি বলেন, ক্রমাগত আমাদের রাজ্য পিছিয়ে পড়ছে। তাই ৩৪ বছরের গল্প না করে গত ১১বছরে রাজ্যে কতগুলি কলকারখানা খোলা হয়েছে, সে কথা বলা হোক। ২০১৪ এর পর থেকে কোন কেন্দ্রীয় বিনিয়োগ এরাজ্যে। ২০১১ সালের পর থেকে শিল্পে কোন বিনিয়োগ হয়নি এই রাজ্য সরকারের। এরপরেও এরা ক্রমাগত মিথ্যাচার করছে। এদিন সেলিম আরো বলেন, রাজ্যে কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে, বন্ধ কলকারখানায় প্রোমোটারি হচ্ছে, সিন্ডিকেটরাজ হচ্ছে। সেই জমিগুলি দখল হচ্ছে। চা বাগান গুলিতেও প্রোমোটার রাজ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কোন প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে না এরাজ্যে। এরাজ্যে তিস্তা প্রকল্প মোদী- মমতা মিলে বন্ধ করে দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গে এইমস হবার কথা থাকলেও, মোদী -মমতা একযোগে বন্ধ করে দেন। এই পরিস্থিতিতে ৩৪ বছরের গল্প শোনাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আসলে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার যে ছিল, সেটা উনি ভুলিয়ে দিয়েছিলেন। আর এখন চাপে পড়ে তার আগেও যে এরাজ্যে একটি সরকার ছিল, তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন।