মিল্টন সরকার:
শুখা মরসুমেও দিনহাটার সীমান্তবর্তি গ্রামে বুড়া ধরলা নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত, যার ফলে ভিটে মাটি ছাড়া প্রায় ৪০টি পরিবার। গত এক মাসেই দিনহাটা ১নং ব্লকের অন্তর্গত বুড়া ধরলা নদীর গর্ভে চলে গিয়েছে ওই বাড়ী ভিটে গুলি। ফলে বসত বাড়ী নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় মাঘের কনকনে ঠাণ্ডায় অস্থায়ী প্লাস্টিকের ছাওনি দেওয়া আস্থানায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাটাচ্ছে গিতালদহ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জারিধরলা ও দড়িবস এলাকার শতাধিক বাসিন্দা। কেউ আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় স্কুলের মাঠে। কেউবা অন্যের ফাঁকা জমিতে বাশ, খড় ও ব্লক অফিস থেকে বিলি করা ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী ঘর করে পরিবার নিয়ে সেখানে কোন রকমে দিন কাটাচ্ছেন।
বর্ষা আসার আগেই যদি সেখানে বাঁধ নির্মাণ করা না যায় তাহলে আগামী বর্ষায় নদী গর্ভে চলে যাবে গোটা গ্রাম। সেই আশঙ্কায় এখন থেকেই ঘুম উড়েছে গ্রামের বাসিন্দাদের। তাই গ্রামকে নদীর গ্রাস থেকে বাঁচাতে অবিলম্বে বাঁধ নির্মাণের দাবীতে সরব হয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। যদিও নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখেছেন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক ও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রিপল সহ অন্যান্য ত্রান সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। করা হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা। এছাড়াও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন আরো অনেকেই তবে এই মুহূর্তে ভিটেমাটি রক্ষার্থে নদী বাঁধ নির্মানের জন্য সরব হয়েছে গোটা গ্রাম।
বসত ভিটে হারিয়ে সরকারি স্কুলের মাঠে আশ্রয় নেওয়া আমেনা বেওয়া বলেন, প্রতি বছর বুড়াধরলা নদীর পার ভাঙ্গছে। বর্ষাকালের মতই এবার শুখা মরসুমেও নদীর পাড় ভাঙ্গতে শুরু করেছে। আমারও ভিটে-মাটি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। আমার মত অনেকের বসতভিটে গিলে খেয়েছে এই নদী। এই ঠাণ্ডার মধ্যে একটি স্কুলের মাঠে সরকারের দেওয়া ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী ঘরে কোন রকমে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছি। নদীতে বাঁধ না দিলে আগামী বর্ষার পর আর এই গ্রামটাই থাকবে না। গোটাটাই নদী গিলে খাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু কালাম বলেন, গ্রামের অনেক মানুষের বসত ভিটা, চাষের জমি নদী ভেঙ্গে নিয়ে গিয়েছে। তারা কেউ স্কুলের মাঠে, কেউ অন্যের জমিতে অস্থায়ী ভাবে ঘর বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এখানকার মানুষ জন।
এই গ্রামকে নদীর গ্রাস থেকে বাঁচাতে অবিলম্বে বাঁধ দিতে হবে। না হলে যেভাবে শুখা মরসুমেও নদীর পাড় ভাঙ্গছে তাতে আগামী বর্ষার পর গোটা গ্রামটাই হারিয়ে যাবে গীতালদহ এর মানচিত্র থেকে……..