Thursday, May 16, 2024
HomeBreaking newsদিদির দূত ও দিদির কর্মসূচিতে ব্রাত্য কোচবিহারের সংখ্যালঘুরা, অভিযোগ তৃণমূল শিবিরে

দিদির দূত ও দিদির কর্মসূচিতে ব্রাত্য কোচবিহারের সংখ্যালঘুরা, অভিযোগ তৃণমূল শিবিরে

সম্প্রতি গোটা রাজ্য জুড়ে চলতে থাকা রাজ্য সরকারের দুটি বিশেষ কর্মসূচি দিদির দূত এবং দিদির সুরক্ষা কবচ তাতে ব্রাত্য কোচবিহারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব, এমনটাই অভিযোগ উঠে আসলো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এবং এই অভিযোগ করেছেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম সংখ্যালঘু নেতা তথা কোচবিহার এক নম্বর ব্লকের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি খোকন মিয়া। এমনকি এই বিষয়ে মন্তব্য রাখতে গিয়ে কোচবিহারের অন্যতম প্রতিষ্ঠা লগ্নের সংখ্যালঘ নেতা তথা কোচবিহার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আহমেদ জানান, আমাকে ডাকলে পরে কর্মসূচিতে যাই, না ডাকলে যাই না। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় কি পোস্ট হয়েছে আমি বলতে পারব না।
যদিও বা এই বিষয়ে মন্তব্য রাখতে গিয়ে খোকন মিয়া পরিষ্কার জানান, আমি যা বলার আমার সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছি। এর থেকে বেশি কিছু আমার বলার নেই।

কোচবিহার জেলা, সংখ্যালঘু এবং রাজবংশী ভোট দ্বারা অধ্যুষিত এই এলাকায় সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। সেই ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম দিন থেকে অন্যতম সংখ্যালঘু মুখ হিসেবে আব্দুল জলিল আহমেদ, খোকন মিয়া, মির হুমায়ুন কবীর, নজরুল হক, সাহেব আলী মিয়া, আলিজার রহমান, মীর মহির উদ্দিন এর মত কয়েকশ সংখ্যালঘু নেতৃত্বকে সামনে সারিতে রেখে ২০১১ থেকে সংগঠন তৈরি করে আসছে। হঠাৎ করেই ২০১৯ সালের পরে সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে সংখ্যালঘু নেতৃত্বদেরকে সরিয়ে রাজবংশী সম্প্রদায়ের নেতাদের উপরে বেশি আকর্ষণ জন্মেছে সংগঠনের বলে মনে করছে কোচবিহারের রাজনৈতিক মহল। এমনকি এই নিয়ে ২০২১ সালে কোচবিহার নয় টি আসনের মধ্যে একটিও সংখ্যালঘু প্রার্থী না দাওয়ায় ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল জেলা জুড়ে। বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য নেতৃত্ব তৎপর হলেও কোথাও ক্ষোভ থেকে গিয়েছিল অন্তরে। বলা বাহুল্য ২০১৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম কর্মসূচি ‘দিদিকে বল’তে সব থেকে মুখ্য ভূমিকা পালন করে কোচবিহার জেলার সংখ্যালঘু নেতৃত্ব। ২০২১ সালের নির্বাচনের ফলাফলে কিছুটা হতাশ হয়েই হয়তো সংখ্যালঘুদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে শাসক দল, বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাধিক বুদ্ধিজীবী। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই মনোমালিন্য বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের দুইটি বড় দলীয় কর্মসূচি ‘দিদির দূত ‘ এবং ‘দিদির সুরক্ষা কবজ’ কর্মসূচিতে কোনরকম সংখ্যালঘু নেতৃত্বদের সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে ক্ষোভ ফেটে পড়ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন এর ক্ষেত্রে সংখ্যালঘ ও নেতৃত্ব একটি বড় ভূমিকা পালন করবে কোচবিহার জেলা এবং আলিপুর জেলা সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায়। তাই এই মনমালিন্য বিরাট প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

ইতিমধ্যেই কোচবিহার জেলার অন্যতম বিশিষ্ট সংখ্যালঘু নেতা তথা কোচবিহার এক নম্বর ব্লকের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি এবং বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ খোকন মিয়া সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তথ্যসূত্র বলছে, কোচবিহারের অন্যান্য নেতৃত্ব রাও এভাবেই ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন। এমনকি নতুন নেতৃত্বদের অঙ্গুলী হেলনে পরিচালিত তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি পুরনো নেতৃত্ব এবং বলিষ্ঠ নেতাদের কোনরকম জায়গা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। দিনহাটা তুফানগঞ্জ কোচবিহারের একাধিক বিধানসভা এলাকায় এখনো পর্যন্ত পূর্ণ কমিটি গঠন হয়নি। সব মিলিয়ে কোথাও কি দিশেহারা পরিস্থিতি শাসকদলের? কোথাও কি তার ফায়দা লুঠতে পারে বিরোধীরা? এর প্রভাব কতটা পড়বে নির্বাচনে? এই ধরনের একাধিক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে শাসক দল। যদিও বা কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বিষয়টি নিয়ে দলীয়ভাবে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানেন। তবে সেটা কতখানি কার্যকর হবে সেটাই এখন দেখার।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments