রসিকবিল মিনি জু পর্যটন কেন্দ্রে নতুন অতিথির আগমন হল। তবে এই অতিথিরা মোটেই বাইরে থেকে আসেনি। রসিকবিলে জন্ম হল ২২ টি ঘড়িয়ালের। আরো বেশ কয়েকটি ডিম ফোটার বাকি রয়েছে,বলে বনদপ্তর জানিয়েছে । নতুন জন্মানো ২২ টি ঘড়িয়াল সুস্থই রয়েছে বলে খবর রসিকবিল সূত্রে । তবে বাংলার মধ্যে এই প্রথম রসিকবিল মিনি পর্যটন কেন্দ্রে ঘড়িয়াল ডিম ফুটে এক সাথে ২২ টি ঘড়িয়ালের বাচ্চা বের হয়েছে। তবে এর সাফল্য, ভাগ করে নিয়েছেন রসিকবিল মিনি দায়িত্বে থাকা বনকর্মীরা। তাদের এক বছরের প্রচেষ্টায় এই সাফল্য বলে বনদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে।
রসিকবিলে আগত ১৫ টি ম্যাকাও পর, নতুন ঘড়িয়াল জন্ম নেওয়ায় পর্যটকদের কাছে রসিকবিলের গুরত্ব বাড়লো বলেই মনে করা হচ্ছে।
কোচবিহার জেলার বন আধিকারিক সঞ্জিত কুমার সাহার বলেন, রসিকবিলে কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে ঘড়িয়ালের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর চেষ্টা চলছিলো। উড়িষ্যার নন্দনকানন ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র রয়েছে। সেখানকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মোতাবেক এই প্রথম, রসিকবিল মিনি যু তে সাফল্য মিলল। এ জন্য নার্সারিতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ডিমগুলি রাখা হয়েছিল । ৭ ইঞ্চির ডিম গুলির শেষ দিনের পরিমাণ ছিল, ১৭০ থেকে ১৯০ গ্রাম । অবশেষে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পর ,ডিম ফুটে ২২ টি বাচ্চা বের হয়েছে । বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, রসিকবিলে ২১ বছর ধরে ১১টি ঘড়িয়াল আছে। বছর দু’য়েক ধরে এদের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বিফলে গিয়েছিল । একাধিক সিসিটিভি নজরদারির মাধ্যমে এবার ঘড়িয়ালের ৬৬টি ডিম সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখা হয়েছিল। এ জন্য কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র বা নার্সারি তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই এতদিন ঘড়িয়ালের ডিমগুলিকে ফোটানোর চেষ্টা চলছিল । উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাত বেশি। তাই বিগত দিনে ডিম পচে যাচ্ছিল। ঘড়িয়ালের প্রকৃত আবাসস্থলে তাপমাত্রা বেশি থাকে। তাই এবার কৃত্রিম উপায়ে বালির বেড বানিয়ে ডিম রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও। নিয়মিত সেগুলি পরিমাপ করার পর, অবশেষে ডিম ফুটে ২২ টি নতুন অতিথি পেল রসিকবিল। তবে বর্তমান ঘড়িয়ালের ১০ ইঞ্চি বড় রয়েছে। মিনিমাম ৫ বছর ট্রায়ালের পর সেগুলিকে আলাদা করে জলাশয়ে ছাড়া হবে।
পর্যটক রাজেশ সরকার জানান, বাংলার মধ্যে সর্বপ্রথম অসম- বাংলা সীমানার শেষ প্রান্ত রসিকবিল যু পর্যটন কেন্দ্রে, ঘড়িয়াল জন্মানোর পর রসিকবিলের শোভা কয়েকগুন বেড়ে গেল। পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় দিক উঠে আসলো বলেই মনে করা হচ্ছে ।
বিপন্ন প্রানীদের প্রজনন হলে আমরা যদি এদের রক্ষার ব্যাপারে সতর্ক হই এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করি তাহলে এই সব প্রানীরা বিপন্ন প্রানীদের তালিকা হতে বাদ পড়বে এবং সংরক্ষিত হবে।