কামাখ্যাগুড়ি: জেলার গন্ডি পেরিয়ে গোটা রাজ্যে আলিপুরদুয়ার জেলার কামাখ্যাগুড়ি হাই স্কুলের নাম এবারও বজায় রইলো। এই স্কুলের চার বন্ধু সর্বোচ্চ নাম্বারের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এক সঙ্গে চার জন স্কুল ছাত্রের নাম সেরার তালিকায় থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশির হাওয়া ছাত্র ও শিক্ষক মহলে। এরা হল রাজ অধিকারী, শিব শংকর পাল, শাহিল দত্ত ও অনির্বান দেবনাথ, তারা প্রত্যেকেই ৬৯৭ নবার পেয়ে সেরার তালিকায় স্থান পেয়েছে। অতিমারি পরিস্থিতিতে চার বন্ধুই মুখে মাস্ক লাগিয়ে স্কুলে উপস্থিত হয়ে। নাম্বার নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও তারা জানায়, এতো নাম্বার পাবো ভাবিনি। পরীক্ষা হলেও ভালো ফল হত এটা আমাদের আশা ছিলই।
কিন্তু মূল্যায়ন সবার একই নিয়মে হয়েছে, তাই এই ফল ঠিকই আছে ।
চার জনই বিঞ্জান বিভাগে ওই স্কুলেই পড়শুনা করতে চায়। আনির্বান দেবনাথ জানায়, সে ভবিষতে ডাক্তার হতে চায়, শিবশংকর ও রাজ অধিকারী পদার্থ বিদ্যা ও শাহিল দত্ত অংক নিয়ে পড়শুনা করার ইচ্ছে কথা জানায় তারা। এদিন কামাখ্যাগুড়ি হাই স্কুলের চার পড়ুয়াকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা দেন কুমারগ্রাম ব্লকের বিডিও মিহির কর্মাকার। কামাখ্যাগুড়ি হাই স্কুলে এসে বিডিও নিজে চার জন পড়ুয়াকে ফুল, মিষ্টি ও কলম উপহার দেন।
Read More –‘জীব সেবাই শিব সেবা’ শিশুদের দুধ,বিস্কুট, হরলিক্স দিল ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশন দিনহাটা শাখা
কামাখ্যাগুড়ি হাই গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে জেলার গন্ডি পেরিয়ে রাজ্যের মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে। ২০১৫ সালে সাগরদ্বীপ দাস মাধ্যমিকে অষ্টম ২০১৬ সালে তার ভাই রিদম দাস মাধ্যমিক সপ্তম স্থান অর্জন করে। ২০১৮ সালে মাধ্যমিকে ওই স্কুলেরই তাপশ দেবনাথ রাজ্যে অষ্টম, ২০১৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে রিদম দাস রাজ্য মেধা তালিকায় সপ্তম স্থান পায়, ২০২০ সালে ময়ুখ নন্দী উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্য মেধা তালিকায় দশম স্থান অর্জন করে। এছাড়াও সাগরদ্বীপ, তনুজা দাস উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল করে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল করার রেওয়াজ বজায় রইলো এবারেও।
রাজ্যে মাধ্যমিকে আলিপুরদুয়ার জেলার কামাখ্যাগুড়ি হাই স্কুলের ৪জন পেল সর্বোচ্চ ৬৯৭ নম্বর
করোনা মহামারীর কারণে এবার বাতিল হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। হাতে কলমে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত থাকতে হল ছাত্রছাত্রীদের । জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার থেকে বঞ্চিত থাকার জন্য হয়তো, সারাজীবন করোনাকে দোষীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখবে ছাত্রকূল। কিন্তু সময় তো থেমে থাকবে না । তাই শিক্ষা ব্যবস্থা কে সচল রাখতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক দের থেকে মতামত নিয়ে মূল্যায়নের পদ্ধতি ঠিক করে রাজ্য শিক্ষা দফতর। নবম থেকে দশমে উত্তীর্ণ হবার সময়কার প্রাপ্ত নম্বরের ৫০ শতাংশ ও দশমে অভ্যন্তরীন মূল্যায়নের প্রাপ্ত নম্বরের ৫০ শতাংশ মিলিয়ে মূল্যায়ন করা হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। তাই মাধ্যমিকে এবার অন্যান্য বারের তুলনায় জেলা জুড়ে মেধা তালিকায় মেধার ছড়াছড়ি।
Read More – মাধ্যমিকে ৬৯৪ নম্বর পেয়ে রাজ্য সম্ভাব্য চতুর্থ স্থান বামনহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র
যদিও এবার প্রথাগতভাবে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।তবুও রাজ্যজুড়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে ৭৯জন । হাতে কলমে পরীক্ষা না হলেও তাদের কৃতিত্ব কে মোটেই ছোট করে দেখছে না কামাখ্যাগুড়ি হাই স্কুল। স্কুলের শিক্ষিকা মৌসুমি সরকার জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বরাবরেই আমাদের স্কুলের ফল ভালো হয়। জেলার গন্ডি পেরিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই রাজ্য মেধা তালিকা স্থান পেয়েছে পড়ুয়ারা। তবে এবছর অতিমারি পরিস্থিতিতে পরীক্ষা হয়নি ঠিকই, কিন্তু পড়ুয়ারা ভালো করবে ওনার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। এক সঙ্গে চার জন পড়ুয়া সেরার তালিকায় নাম থাক থাকায় স্বাভাভিকভাবেই খুশি তিনি। আগামীদিনে আরও সাফল্য কামনা করেন তিনি।