Sunday, May 5, 2024
Homeমালদারহস্য মৃত্যুর কিনারা করতে কবর থেকে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠালো পুলিশ

রহস্য মৃত্যুর কিনারা করতে কবর থেকে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠালো পুলিশ

মালদা: রহস্য মৃত্যুর কিনারা করতে মৃতদেহ কবর থেকে তুলে
ময়নাতদন্তের জন্য পাঠালো পুলিশ। বিডিও এবং পুলিশের কর্তাদের উপস্থিতিতে সম্পূর্ণ হল এই প্রক্রিয়া। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ভিডিও রেকর্ড করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী থাকতে ভিড় জমিয়ে ছিল বহু মানুষ। কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভাটোল গাড়রা গ্রামের বাসিন্দা হাসনের মৃত্যু হয় ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখে। পরিবার সূত্রে জানা যায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছিল সে। কিন্তু পরিবারের লোকেরা ময়নাতদন্ত না করিয়ে ইসলামিক রীতি অনুযায়ী কবর দিয়ে দেয়। হাসনের প্রথম স্ত্রী আরবিনা বিবি অভিযোগ করে তার দ্বিতীয় স্ত্রী আনা বিবি এবংপরিবারের অন্যান্য লোকেরা চক্রান্ত করে তার স্বামীকে হত্যা করেছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় এই নিয়ে আটজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আরবিনা বিবি। মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের দাবী জানায় সে। সেই দাবি অনুযায়ী রহস্যের কিনারা করতে এই দিন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে গাড়রা গ্রামের কবরস্থান থেকে মাটি খুঁড়ে তোলা হয় হাসনের দেহ। সমগ্র প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। উপস্থিত ছিল হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন
আধিকারিক অনির্বাণ বসু, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদূত গজমের সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। কবর থেকে মৃতদেহ তোলা দেখতে ভিড় জমিয়েছিল এলাকার বহু মানুষ। মৃতদেহ তুলে নিয়ে মালদা মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে হরিশচন্দ্রপুর থানার পুলিশ।উল্লেখ্য, হাসনের দুই স্ত্রী ছিল। প্রথম স্ত্রী আরবিনা বিবিকে প্রেম করে বিয়ে করে হাসন। কিন্তু পরিবারের মত না থাকায় প্রায়শই অশান্তি লেগে থাকতো। অশান্তির জেরে একমাত্র পুত্র সন্তানকে নিয়ে এক বছর আগে বাপের বাড়ি চলে যায় আরবিনা বিবি। তারপরেই তার পরিবারের লোকেরা আনা বিবির সঙ্গে বিয়ে দেয় হাসনের। এদিকে প্রথম স্ত্রী আরবিনা বিবি ক্রমাগত দাবী জানাতে থাকে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার। ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ আরবিনা বিবিকে বাপের বাড়ি আনতে যাওয়ার কথা ছিল হাসনের। ৩ তারিখ এই নিয়ে কথা হয়েছিল স্বামী স্ত্রীর মধ্যে। কিন্তু চার তারিখ আরবিনা বিবি খবর পায় হাসন আত্মহত্যা করেছে। ৫ তারিখ ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসে জানতে পারে অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। তারপরেই সে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় খুনের। তবে কি দুই স্ত্রীকে নিয়ে পারিবারিক অশান্তিতে ভুগছিল হাসন? মানসিক অবসাদের জেরে আত্মহত্যা? নাকি দ্বিতীয় স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার কথা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঝামেলা? তার জন্যই খুন হতে হলো তাকে? এই মুহূর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বহু প্রশ্ন। পুলিশ অপেক্ষা করছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য। এদিকে এই ঘটনায় আট জন অভিযুক্তের মধ্যে এখনো পর্যন্ত পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে রাকিব নামে একজন। বাকিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।কুশিদা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি তথা উপ-প্রধান মোহাম্মদ নূর আজম বলেন, হাসন নামে এই ব্যক্তিটি চার তারিখ রাতে মারা যায়। জানা যাচ্ছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু পরিবারের লোক প্রশাসন কে না জানিয়ে কবর দেয়। এই দিকে তার প্রথম স্ত্রী খুনের অভিযোগ করেছে। আমরা মানুষকে সচেতন করবো যাতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে আগে প্রশাসন কে জানায়।প্রথম স্ত্রী অভিযোগকারী আরবিনা বিবি বলেন, আমার স্বামী আমাকে ১৪ তারিখ নিতে আসার ছিল। তাই জন্য ওর দ্বিতীয় স্ত্রী আনা বিবি এবং পরিবারের লোকেরা মিলে ওকে খুন করেছে। পরিবারের লোকেরা সব সময় আমার সঙ্গে অশান্তি করত।
আরবিনা বিবিকে সহ্য করতে পারত না হাসনের পরিবার। তাই আরবিনা বিবিকে হাসন ফিরিয়ে আনবে বলেই কি পরিবারের লোকের রাগ ছিল। হাসন যদি আত্মহত্যা করে তবে পরিবারের লোক প্রশাসনকে জানালো না কেন? ময়নাতদন্তে রিপোর্ট আসার সঙ্গে সঙ্গেই মিলে যাবে অনেক প্রশ্নের উত্তর।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments