Thursday, May 2, 2024
Homeময়নাগুড়িভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখা শিক্ষিত যুবক পেটের দায়ে করছেন ফাস্ট ফুডের...

ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখা শিক্ষিত যুবক পেটের দায়ে করছেন ফাস্ট ফুডের দোকান

ময়নাগুড়ি , ৭ সেপ্টেম্বর : জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন সকলেই দেখেন। কিন্তূ বাস্তবে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে সফল হন খুব সামান্য কয়েকজন। অনেক সময় উচ্চশিক্ষা ও চাকরির স্বপ্নের মাঝে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা একটি বড় সমস্যা হয়ে দাড়ায় । সেই প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সাফল্যের চূড়া ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখছেন ময়নাগুড়ির যুবক সৌরভ রায় (২৪) । কলকাতার একটি কলেজ থেকে ২০২১ ' এ বিটেক করেন তিনি । বিটেক করার পর এখন তার স্বপ্ন পিএসসি করে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার । কিন্তু সেই স্বপ্নের মাঝে আর্থিক সংকট প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে । তবে সৌরভ হার মানার পাত্র নন । সম্প্রতি তিনি নিজ এলাকার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ফাস্ট ফুডের দোকান খুলেছেন । দোকান করে পরিবারকে সাহায্য করার পাশাপাশি অর্থ বাঁচিয়ে পিএসসি'র প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি । পিএসসি'তে সফল হয়ে ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে সৌরভের । তার এই কঠোর পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকে । ময়নাগুড়ি ব্লকের চূড়াভান্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম্য এলাকা ভূজারিপাড়ায় সৌরভের বাড়ি । তার বাবা অমৃতকুমার রায় একজন সাধারণ কৃষক । কৃষিকাজ করে সংসার খরচ ও তিন ছেলের পড়াশুনার খরচ চালান তিনি । কিন্তু তাতে হিমশিম অবস্থা অমৃত বাবুর । বড়ো ছেলে সৌরভ গত বছর কলকাতার বজ বজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ৭৪ শতাংশ নাম্বার নিয়ে বিটেক পাশ করেন । সেখানে তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে এই পড়েন । অমৃত বাবুর বাকি দুই ছেলেও কলেজ ছাত্র । সৌরভের বিটেক করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা । সৌরভবাবু জানান , কলেজের খরচ চালাতে তার পরিবার সক্ষম ছিল না । কলেজের খরচ চালাতে তাকে বিটেক করার পাশাপাশি প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করতে হয়েছিল । এখন তার স্বপ্ন পিএসসি'তে সফল হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার । কিন্তু তার স্বপ্নের মাঝে বরাবরের মতো প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক সংকট । পরিবারের অবস্থাও ভালো না । কিন্তু সৌরভ হার মানার পাত্র নন । পরিবারকে সাহায্য করতে ও পিএসসির প্রস্তুতির খরচ জোগাতে সম্প্রতি তিনি ফাস্টফুডের দোকান শুরু করেছেন । সৌরভের ফাস্টফুডের দোকান খোলাতে এলাকার মানুষ অবাক হয়েছেন বটে তবে তার লক্ষ্যের কথা জানতে পেরে সকলেই কুর্নিশ জানাচ্ছেন তাকে । সৌরভবাবু বলেন , 'পরিবারের সহযোগিতায় ও ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় বিটেক করি । বিটেক কোর্স চলাকালীন আর্থিক সংকটের জন্য আমাকে প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতে হয়েছিল । এখন স্বপ্ন পিএসসি করে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার । তার প্রস্তুতি নিচ্ছি । আর্থিক সংকটের কারণে ফাস্টফুডের দোকান করছি ।' সৌরভের বাবা অমৃতকুমার রায় বলেন , ' সামান্য কৃষি কাজ করে তিন ছেলের পড়াশোনার খরচ ও সংসার খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা । তাই বড়ো ছেলে নিজের খরচ নিজে জোগাতে বাধ্য হয়ে ফাস্টফুডের দোকান করছে । তবে এতে লজ্জা বা দ্বিধার কিছু নেই । আমিও সাধ্যমত সাহায্য করছি তাকে ।'

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments