নিজস্ব সংবাদদাতা,দিনহাটাঃ
নবদ্বীপের শিল্পীর তৈরি ছয় ফুট উচ্চতা ও পাঁচশো কেজি ওজনের পিতলের দুর্গা প্রতিমা পাড়ি দিল কোচবিহার জেলার দিনহাটায়। প্রায় এক বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রতিমা টি তৈরি করেছেন নদীয়ার নবদ্বীপ পৌরসভার চোদ্দো নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পেশায় হস্তশিল্পী অলক মন্ডল। এছাড়াও মূর্তি তৈরি করতে মোট ছয় লক্ষ্য টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন অলক বাবু। সাধারণত দেবী দুর্গার দশ হাতে থাকে দশ রকমের অস্ত্র। কিন্তু অভিনব এই দুর্গা প্রতিমার হাতে কোন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। প্রতিমার প্রতিটি হাত আশীর্বাদ সূচক ইঙ্গিত প্রদান করছে। এই বিষয়ে শিল্পী অলক মন্ডল বলেন, অসুর নিধন রত মা দুর্গার রুদ্র মূর্তির বদলে মায়ের শান্ত ও মমতাময়ী রূপ প্রকাশ করা হয়েছে এই মূর্তিটির মধ্য দিয়ে। পাশাপাশি চিরাচরিত দুর্গা মূর্তির ক্ষেত্রে মহিষাসুর যুদ্ধরত অবস্থায় দেবী মূর্তির পদদেশে অবস্থান করেন। কিন্তু ব্যতিক্রমী এই দুর্গা প্রতিমার ক্ষেত্রে মহিষাসুর মায়ের কাছে সম্পূর্ণভাবে অস্ত্রবিহীন অবস্থায় করজোড়ে নিজেকে সমার্পন করছেন আশীর্বাদ রত দেবী দুর্গার কাছে। সর্বোপরি মায়ের রুদ্র মূর্তির বদলে স্নেহময়ী রূপ প্রকাশ পেয়েছে অভিনব এই দুর্গা প্রতিমাটিতে। গত এক বছর আগে কোচবিহার জেলার দিনহাটার মদনমোহন পাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়দীপ ঘোষ মা দুর্গার এই চিন্ময়ী মাতৃ মূর্তিটি তৈরি করতে দায়িত্ব দেন নবদ্বীপের হস্তশিল্পী অলক মন্ডল কে। এরপর এক বছরের নিরন্তর প্রচেষ্টার পর মাতৃমূর্তিটি তৈরি করেন হস্তশিল্পী অলক মন্ডল। এলাকায় সুপরিচিত প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী জয়দীপ বাবুর বাড়িতে বিগত পঁচিশ বছর ধরে দুর্গাপূজার প্রচলন রয়েছে। কিন্তু বাড়ির মন্দিরে অবক্ষয় মাতৃমূর্তি প্রতিষ্ঠা করে সারা বছর মা দুর্গার আরাধনা করার জন্যই তিনি এই মাতৃমূর্তি টি তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন জয়দীপ ঘোষ। পাশাপাশি বছরের প্রতিটা মুহূর্তে মাকে তিনি স্নেহময়ী রূপে দর্শন করতে চান বলেই মায়ের এই আশীর্বাদ রত শান্ত রূপ মাতৃ মূর্তির মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন তিনি। এছাড়াও মা দুর্গা রুদ্র মূর্তির বদলে স্নেহময়ী রূপে দশ হাতে সকলকে আশীর্বাদ দান করুন ও প্রত্যেককে ভালো রাখুন মূলত এই আকাঙ্ক্ষা নিয়েই তিনি মাতৃমূর্তি টি তাঁর মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন জয়দীপ বাবু। পিতলের তৈরি মাতৃমূর্তি টি শুক্রবার নবদ্বীপ থেকে সড়ক পথে রওনা হয় শনিবার ভোরে গিয়ে পৌঁছায় কোচবিহার দিনহাটা মদনমোহন পাড়া এলাকায় জয়দেব ঘোষের বাড়িতে। এরপর তা ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে প্রতিষ্ঠা করা হবে ঘোষ পরিবারের মন্দির প্রাঙ্গণে। এবং স্নেহময়ী রূপে এই বছর মা দুর্গা পূজিত হবেন জয়দীপ ঘোষের বসত বাড়িতে।