উড়িষ্যার ভয়ংকর ট্রেন দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ময়নাগুড়ির ১, মৃত ১
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বন্ধ হয়ে পড়েছে রান্না
বাপ্পা রায়, ময়নাগুড়ি, ৩ জুন : উড়িষ্যার বালেস্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে ময়নাগুড়ি ব্লকের দুই জন। ময়নাগুড়ি ব্লকের উত্তর মাধবডাঙ্গা এলাকার অসম মোড় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা শৈলেন রায় গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী এক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। অন্যদিকে ওই এলাকার আরেকজন তরুণ রায় দুর্ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে ফোন মারফত যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ হয়নি বলে জানা হয়েছে। কিন্তূ শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয় যে তরুণ রায় এর দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়। প্রসঙ্গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উড়িষ্যার বালেস্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। লাইনচ্যুত হয়ে বিপত্তি ঘটে। ঘটনার জেরে মৃত্যুর সংখ্যা এবং আহতের সংখ্যা হু হু করে বেড়েই চলেছে। রেল দফতর, কেন্দ্র সরকার সহ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চালু করা হয়েছে হেল্প লাইন নম্বর। জোর কদমে চলছে উদ্ধার কাজও।
জানা যায়, উড়িষ্যার বালেস্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন ময়নাগুড়ি ব্লকের দুইজন। তারা ভিন রাজ্যে কাজের জন্যই রওনা হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। উভয়ের বাড়ি ময়নাগুড়ি ব্লকের মাধব ডাঙ্গা ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর মাধবডাঙ্গা এলাকায়। শৈলেন রায় গুরুতর ভাবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও খোঁজ মেলেনি তরুণ রায়ের। শৈলেন রায়ের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শৈলেন রায় পেশায় একজন ডাম্পার গাড়ি চালক। তামিলনাড়ুতে বেসরকারি কোম্পানির কাজ করার উদ্দেশ্যে তিনি বাড়ি থেকে গত বৃহস্পতিবার রওনা হয়েছিলেন। এরপরেই গতকাল রাতে এই খবর শুনতে পান পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার জেরে শৈলেন রায়ের বুকের পাঁজরের বেশ কিছু হাড় ভেঙেছে, হাতে ও পায়ের হাড় ভেঙেছে বলে জানা গিয়েছে। গতকাল রাত আনুমানিক আটটা নাগাদ এই খবর শোনার পরেই কার্যত বাড়িতে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে যায়। গভীরভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। এই বিষয়ে আহত শৈলেন রায়ের মা ভানুবালা রায় বলেন,” গতকাল রাতেই আমরা খবর পেয়েছি। ও কাজের জন্য বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু গতকাল এই খবর শুনতে পাই। ওর বুকের হাড় ভাঙছে বলে জানতে পারছি। সে কেমন আছে বাড়ি থেকে বুঝতে পারছি না।” অন্যদিকে, ওই এলাকার আরেক যুবক তরুণ রায় এই ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। তরুণ রায়ও কোম্পানির গাড়ি চালানোর জন্য তামিলনাড়ুর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন এক সাথে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে শৈলেন রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না তরুণ রায়ের সঙ্গে। ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার সকাল নাগাদ তরুণ রায়ের মা সুমিত্রা রায় গভীরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি বর্তমানে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন সূত্রে মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়। এই বিষয়ে তরুণ রায়ের বোন স্বপ্না রায় বলেন, "সম্পর্কে আমার জামাইবাবু শৈলেন রায়ের সাথে গাড়ি চালানোর কোম্পানির কাজে যাচ্ছিলেন তামিলনাড়ুর উদ্দেশ্যে। গতকাল রাতে এই খবর আমরা পাই। জামাইবাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলো আমার দাদার সাথে কোনভাবে এখনো যোগাযোগ করা যায়নি।" এই ঘটনায় রীতিমতো ময়নাগুড়ি জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনা শোনার পর দুটি বাড়িতেই রান্না বন্ধ হয়ে যায়। আজ সকাল থেকে দূর দূরান্তের আত্মীয় স্বজন বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও জেলা প্রশাসনের তরফে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।