মঙ্গলবার সকাল থেকেই পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে কালঘাম ছুটে যায় সাধারণ মানুষের। ডিজেল 100.7, পেট্রোল 115.51 । আর নয়, এবার বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলছেন সাধারন মানুষ।
কৃষক থেকে বৃত্ত সমাজ সকলের উপর এই অর্থনৈতিক ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির। কোচবিহার জেলার অন্যতম নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর ব্যবসায়ী প্রেমচাঁদ বানিয়া বলেন, ডিজেলের দাম এবং পেট্রোলের দাম এর এই বৃদ্ধি সবথেকে বড় প্রভাব ফেলবে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী ওপর। যে অর্থ বিপননের ক্ষেত্রে ব্যয় হতো আজ থেকে 2 বছর আগেও এখন তা প্রায় দ্বিগুণ। সম্প্রতি পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কলকাতা, আসাম, উড়িষ্যা, বিহার, উত্তর প্রদেশ এলাকা থেকে পণ্য আমদানি বিশেষ করে খাদ্যশস্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাধারণমানুষ-এর সবথেকে বেশি সমস্যা হবে।
কোচবিহার ভবানীগঞ্জ বাজার কাঁচামালের নিত্য ব্যবসায়ী জয় দেব বর্মন বলেন, কাঁচা শাকসবজি প্রতিদিন আমদানি করতে হয়
যেভাবে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, যেভাবে দৈনিক তেলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই দিকে তাকিয়ে জিনিস আমদানী করাটাই সব থেকে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু আমদানি নয় কোচবিহারের একাধিক কাঁচা সবজি যা ভিন্ন জেলায় রপ্তানি হয় সেটাও করা সম্ভব হচ্ছে না। বিপণনের ছড়া খরচ বহন করতে রাজি হচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে কৃষকদেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জমির ফসল জমিতেই পড়ে থাকছে।
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সবথেকে বড় ক্ষতি হতে চলেছে কৃষি ক্ষেত্রে। এখনো পর্যন্ত কোচবিহার জেলার মোট কৃষি জমির 80% মোটর চালিত জলের মাধ্যমে সেচ প্রক্রিয়ায় চাষাবাদ হয়। এ মোটর চাঁদ এখানে সবথেকে বেশি প্রয়োজনীয় দ্রব্য ডিজেল। এক লিটার ডিজেলে মাত্র 10 মিনিট চলে অতি উচ্চমানের মোটর। সুতরাং পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জমির সেচ প্রক্রিয়া। কৃষি জমিতে জলের অভাব ফসল নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হবে এমনটাই আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কৃষি দপ্তর।
অপরদিকে কোচবিহার জেলার একাধিক পেট্রোলপাম্পে এদিন দেখা গেল অবিশ্বাস্য এক চিত্র। যেখানে দিনের বেশিরভাগ সময়ে 30 থেকে 40 টি মোটরবাইক গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতো পেট্রোল ডিজেল নেওয়ার জন্য সেখানে আজকের চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। দিনহাটার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পেট্রোল পাম্প সূত্রে জানানো হয়েছে সকাল থেকে মাত্র 100 গাড়িতে তেল ভরতে পেরেছেন তারা। যার মধ্যে ডিজেল গাড়ি মাত্র তিনটি। পেট্রোল পাম্প ফাঁকা। এই অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।
কোচবিহার জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণ মানুষের জন্য নয়। তারা সাধারণ মানুষের কথা ভাবেও না মনেও রাখে না। তার প্রমাণ বিগত দিনে কৃষক আন্দোলনের পাওয়া গেছে। যেভাবে পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধি হচ্ছে তাতে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি হওয়া স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে টান পড়বে। খাদ্য সংকট ঘটতে পারে। তৃণমূল কংগ্রেস একত্রিতভাবে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে, রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষার্থে আন্দোলন করবে।
কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে মন্তব্য করে বলেন, পেট্রোপণ্যের উপর এ করের বোঝা শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের নয় রাজ্য সরকারের রয়েছে, তারা সাধারণ মানুষের কথা ভাবুন। সমস্ত দায়ভার কেন্দ্রীয় সরকারের হতে পারে না।