কোচবিহার:
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ১৮ জুলাই খাপাইডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালজানির বাসিন্দা ১৪ বছরের এক কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
বুধবার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিশোরীর মৃত্যু হয়। ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবিতে সমস্ত স্কুল-কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য এসএফআই তরফে বুধবার মাইকে করে বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করা হয়।
পাশাপাশি এদিন মৃতার বাড়ির এলাকাতেও দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। লাঠিসোটা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, অভিযুক্তদের ফাঁসির শাস্তি দিতে হবে। প্রচুর পুলিশ বাহিনী মোতায়ন রয়েছে এলাকায়। কালজানিতে নামানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৮ জুলাই ওই কিশোরী স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। পরিবারের অভিযোগ, প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাঁকে ফুঁসলে অপহরণ করে মাথাভাঙায় নিয়ে যায় এক যুবক। সেখানে কিশোরীর ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়। এদিকে, মেয়ে বাড়িতে না ফেরায় বাড়ির লোকজন খোঁজখবর শুরু করেন। কিন্তু কিশোরীর হদিস না পেয়ে ২০ জুলাই পুন্ডিবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। এরপর ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ বাপ্পা বর্মন সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতনের ফলে কিশোরী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রথমে তাঁকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কোচবিহারের একটি নার্সিংহোম হয়ে ২০ জুলাই মাঝরাতে তাকে কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে জেলার প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় পড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিন প্রায় সংজ্ঞাহীন থাকার পর এদিন সকালে মৃত্যু হয় কিশোরী।
এদিন এমজেএন মেডিকেলে আসেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। এদিকে বিজেপি নেতা যখন মৃতার বাবা সহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখনই অনুগামীদের নিয়ে মেডিকেলে ঢোকেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। সেই সময় তাঁরা রাহুল সিনহা ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে থাকেন। এক সময় তৃণমূল ও বিজেপি দু’জনই দু’পক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলতে থাকে। মৃতার পরিবার কোন দলের পক্ষে থাকবে, তা নিয়ে মৃতার বাবাকে ধরে টানাটানি শুরু হয়। কঠোর পুলিশের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দেহ বের করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। এরপর মেডিকেলের সামনে সুনীতি রোডে মৃতার বাবাকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে টানাটানি করা হয় বলে অভিযোগ। টানাটানি মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন কিশোরীর বাবা। শেষ পর্যন্ত অভিজিৎ দে ভৌমিকের গাড়িতে করে মৃতার বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয়।
নির্যাতিতার মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার কোচবিহার জেলাজুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয় এসএফআই।