বিশ্বকাপ মানেই, বিশ্বের নানান প্রান্তের মানুষের ভিড়। নুতন বন্ধুত্ব। মেলামেশা। এত মানুষের মেলায় ‘অবাধ মেলামেশা’ কোনও বিশ্বকাপে শাস্তি যোগ্য অপরাধ ছিল না । সেই অবাধ মেলামেশা এবার কাতারে কল্পনাতেও না আনাই ভালো। আনলেই সাতটি বছর কাটাতে হবে সেই দেশের কারাগারে!
কি সেই অন্যায়?
মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসেবে এবার বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করতে চলেছে কাতার। মধ্যপ্রাচ্যের বাকি সব দেশের মতো কাতারও বেশ রক্ষণশীল দেশ। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সমর্থকদের “অবাধ মেলামেশায়” নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেই দেশের প্রশাসন। জানিয়েছে, এই রকম ঘটনা (স্বেচ্ছায় হলেও) ঘটলে সেটাকে অপরাধ বলে মেনে নেওয়া হবে। এবং এই নিয়ম ভাঙার জন্য জেলে পাঠানো হবে। এমনকি “সমকামীতা প্রদর্শন” করে এমন কোনো কিছু করা যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে কাতার সরকার।
বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই ম্যাচ জয়ের আনন্দে সমর্থকদের মধ্যে থাকে অবাধ মেলামেশা, আর সুরা পানের ঢল । এসব এবার কাতার বিশ্বকাপে সমর্থকরা সেই সুযোগ পাবে না। সুরা পানের উপরও থাকছে নিষেধাজ্ঞা। আর, এমন সব নিয়ম ভাঙলেই কাতারে জেলে কাটাতে হতে পারে সাত সাতটি বছর।
কাতার পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্বামী-স্ত্রী না হলে বিশ্বকাপ দেখতে এসে সমর্থকরা অবৈধ কোনো ধরনের শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে পারবে না। এই নিয়ম না মানলে, ৭ বছর পর্যন্ত জেল হবে। বিশ্বকাপ ফুটবল এমন নিয়ম এটাই প্রথমবার কড়া ভাবে চালু হচ্ছে।
কাতার দেশে বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ও সমকামীতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনিতেই সেই দেশটিতে থাকা মানুষের বিরদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তির ব্যবস্থা আছে। এবার সেই দেশের একই নিয়ম মানতে হবে খেলা দেখতে আসা ভিন্ন দেশের সমর্থকদের। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফাও এই নিয়ম মেনে চলার আহবান জানিয়েছে ইতিমধ্যে।
ফিফা কর্মকর্তা নাসের আল খাতের বলেছেন, “প্রত্যেক সমর্থকের নিরাপত্তা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জনসমক্ষে ব্যক্তিগত ভালোবাসা দেখানো এই দেশের সংস্কৃতি নয়। সেটা সবার জন্যই প্রযোজ্য।”
এই বিষয়ে কাতারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “কাতার খুব রক্ষণশীল দেশ। এখানে অনেক কিছুই করা যায়না। সমকামিতা আচরণ শুধু সেখানেই প্রকাশ করা উচিত – যে দেশে এটা মানা হয়।”
বিশ্বকাপ আয়োজকরা আগে থেকেই সমর্থকদের জানিয়ে দিয়েছে কি করা যাবে আর যাবে না। বাকি সিদ্ধান্ত এবার সমর্থকদেরকেই নিতে হবে। ভিসা দেওয়ার আগেই এই নির্দেশিকাতে সায় দিয়ে আবেদন করলে, তবে মিলছে সেই দেশের প্রবেশাধিকার।