প্রতিবেদনে মিল্টন সরকার
ডুয়ার্সের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হল চিলাপাতা। সারা বছর ধরে বহু পর্যটক এর আনাগোনা হয় এখানে। এখানে বহু রাভা সম্প্রদায়ের মানুষেরা বসবাস করেন। বংশ-পরম্পরা ধরে এখানে যাদের বসবাস বলে জানা যায়। সবুজে ঘেরা চিলাপাতার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি সেখানে স্থানীয় রাভাদের নৃত্য উপভোগ করেন পর্যটকেরা। এই রাভা নৃত্য এর মাধ্যমে একদিকে যেমন জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন স্থানীয় মানুষজন পাশাপাশি তাদের সেই সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন তারা।
প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলায় চিলাপাতায় রাভা নৃত্য পরিবেশিত হয়। সেখানে দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকেরা সেই নৃত্য উপভোগ করেন এবং শিল্পীদের উৎসাহিত করেন। সন্ধ্যেবেলার জঙ্গল সাফারির পরই রাভা নৃত্য উপভোগ করেন পর্যটকরা। এর জন্য প্রতিটি পর্যটক এর কিছু পরিমাণ টাকা পূর্বেই কাউন্টারে কেটে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এক দিকে যেমন প্রতিদিন জীবিকা নির্বাহের জন্য মুনাফা লাভ হচ্ছে পাশাপাশি তাদের এই ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ রাভা বলেন, বাপ ঠাকুরদার আমল থেকে এই নাচ চলে আসছে। আমরা সেগুলোর শিখে এখন পরিবেশন করছি, আমাদের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে। আমাদের নাচ দেখে পর্যটকরা আনন্দ পায় আমরাও বেশ খুশি হই। তিনি আরো বলেন, পর্যটকরা আমাদের উৎসাহিত করেন, আমাদের প্রশংসা করেন।
পূর্ব বর্ধমান থেকে আগত এক পর্যটক বলেন, রাভা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য এখনও তারা ধরে রেখেছেন। ভেবেছিলাম আজকেই চলে যাব কিন্তু আমরা এই নাচ দেখার অপেক্ষায় ছিলাম, খুব ভালো লাগলো। উনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।
স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী তথা চিলাপাতা জিপসি ওনার্স ইউনিয়নের সম্পাদক বিমল রাভা বলেন, এই নাচ আমাদের সংস্কৃতি। এখানে ঘুরতে এসে পর্যটকরা এই নাচ দেখে খুব আনন্দিত হন। এই নাচের মাধ্যমে এখানকার স্থানীয় শিল্পীরা আর্থিকভাবে সচ্ছল। রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও ইনারা শিল্পী ভাতা পেয়ে থাকেন। পর্যটকদের মনোরঞ্জন করতে এবং নিজেদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখছে এখানকার শিল্পীরা ।