ময়নাগুড়ি : শুক্রবার দিনের বেলায় ময়নাগুড়ি রোডের হাট থেকে বেশ কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করেন বিএসএফ। তিনটি ব্যাটারি চালিত ইম্প্রভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস, দুটি বন্দুক এবং বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য ব্যবহৃত সালফার ও কার্বাইড উদ্ধার হয় বলে জানায় বিএসএফ। শুক্রবার উত্তরবঙ্গ সীমান্তের ৯৮ ব্যাটেলিয়ন জলপাইগুড়ি সেক্টর ও চ্যাংরাবন্ধা বিওপি এর জোয়ানরা ময়নাগুড়ি রোড হাটে সাদা পোশাকে এই সামগ্রী উদ্ধার করেন বলে জানা যায়। যদিও এই ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক ময়নাগুড়ি থানায় জমা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। যদিও পুরো বিষয়টি নিয়ে বিএসএফ এর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। গতরাতে বিএসএফ এর জওয়ানরা ময়নাগুড়ি থানায় আসলে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ওয়াংদেন ভুটিয়া সহ পুলিশ আধিকারিকরা ঘটনা সরেজমিনে তদন্ত করতে যান। যদিও এই বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ” অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। তদন্তে কিছু উঠে এলে জানানো হবে।”
এদিকে এই ঘটনা চাউর হতেই জেলা জুড়ে রাজনৈতিক তর্জা শুরু হয়ে গিয়েছে। শাসক শিবির এই ঘটনাকে কেন্দ্রীয় সরকারের চক্রান্ত বলেই দাবি করেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা এবং রাজ্য সরকারকে কলুষিত করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা বলে দাবি তৃণমূলের। এই বিষয়ে ময়নাগুড়ি ১ নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মনোজ রায় বলেন,”কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে কলুষিত করার জন্য সিবিআই, ইডি লাগিয়েছিল এবার তাদের আরেক চক্রান্ত বিএসএফ। কারণ প্রথমে আমরা জানতে পারলাম ময়নাগুড়ি নতুন বাজারে উদ্ধার হয়েছে, পরে জানতে পারি কৃষক বাজারে এবং রাতে জওয়ান রা জানান ময়নাগুড়ি রোড হাটে। ফলে এটি একটি নিছক কাহিনী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারকে বদনাম এবং শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।” যদিও বিরোধীরা শাসক দলের দাবি মানতে নারাজ। বিজেপির দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাসক দল সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। এই বিষয়ে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক চঞ্চল সরকার বলেন, ” কিছুদিন আগে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ফলে এক তৃণমূল নেতা মারা গিয়েছেন। রাজ্যের মানুষ জানেন কারা এই ধরনের কাজ করছেন। তৃণমূলের মদত পুষ্ট জঙ্গীরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ময়নাগুড়ির মতো শান্তি প্রিয় জায়গাকে সন্ত্রাসের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।”
তবে এই বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় কোনো জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে কি না বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। এই ঘটনায় ব্যবসায়িক মহল থেকে শুরু করে গোটা ময়নাগুড়ি জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।