প্রেসিডেন্সি জেলে হেভিওয়েট পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম রাত কেটেছে দুঃসহভাবে। মেঝেতে কম্বল পেতে শুতে পারেননি। পারেনি নি মেঝের উপর বসতেও। তাই বাধ্যতামূলক কমোডে বসে তাঁকে রাত কাটাতে হয়েছে। পরে চিকিৎসকদের কাছে তিনি একটি খাট বা চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। সেইমতো প্রেসেডেন্সি জলের ‘পয়লা বাইশ’ সেলে খাট আসে। সেই খাটে বসে বা শুয়ে সারা দিন-রাত বই পড়েই কাটাচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর আগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকদের কাছেও বই চেয়েছিলেন। সেইমতো তাঁরা বই পাঠান পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। চেয়ে পাঠান ডায়েরি ও পেনও। তিনি ডায়েরির পাতায় লিখতে চান দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার কথা। মোট কথা পড়াশোনা আর লেখালেখি নিয়েই তিনি দিনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি তাঁর আইনজীবী সুকন্যা ভট্টাচার্যের কাছে বই চেয়ে পাঠান। সেইমতো তাঁর আইনজীবী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাসভবন থেকে দুটি বই এনে দেন। তার মধ্যে একটি বই হল মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের লেখা ‘রামকৃষ্ণ কথামৃত’। আর অন্য বইটি হল মহাশ্বেতা দেবীর ‘অমানিবাস’। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই বই-প্রেম এবং রামকৃষ্ণ কথামৃত পড়ার ইচ্ছা নিয়ে বিরোধীরা বলতে শুরু করেছেন, দুর্নীতির দায়ে জেলে গিয়ে তাঁর এখন ধর্মে মতি হয়েছে। তিনি ‘ধর্ম কথা’ পড়ছেন। পড়ছেন ‘টাকা মাটি মাটি টাকা’।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বলেন, তিনি একজন সাধারণ নাগরিকের মতোই কারাগারে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমরা এই আইনি লড়াই লড়ব। এবং একদিন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করব। মানসিক দৃঢ়তা রেখেই এই কথাগুলি বলছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সারা দিনই তিনি বইয়ে মুখ গুঁজে কাটিয়ে দিচ্ছেন।