Friday, March 29, 2024
Homeমালদাকোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রাইস মিল মালিকের বিরুদ্ধে

কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রাইস মিল মালিকের বিরুদ্ধে

সরকারী ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে ধান নিয়ে চাল দিচ্ছে না সরকারকে, কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রাইস মিলের মালিকের বিরুদ্ধে।

মালদা: রাজনৈতিক নেতা নয় এবার সরকারের কোটি কোটি টাকা তছরূপ করার অভিযোগ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের পক্ষ থেকে সিল করে দেওয়া হলো রাইস মিল। সরকারের ন্যায্য মূল্যের ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে কোটি কোটি টাকার ধান কিনে সরকারকে চাল দিচ্ছে না রাইস মিল। রাইস মিল মালিকদের বিরুদ্ধে কেন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হচ্ছে না উঠছে প্রশ্ন? সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এর পেছনে রয়েছে শাসকদলের নেতাদের হাত। দাবি বিরোধীদের। যারা যুক্ত থাকবে রাজনীতি না দেখে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে সাফাই তৃণমূলের। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বার্তা জেলাশাসকের। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসীহাটা এলাকার কুস্তুরিয়া গ্রামে বাকে বিহারী এগ্রোটেক প্রজেক্ট প্রাইভেট লিমিটেড রাইস মিল। এই রাইস মিল চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের হাজতপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের কুশিদা ন্যায্য মূল্যের সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে ধান কেনার বরাত পায় সরকারের কাছ থেকে। বদলে তাদের চাল দেওয়ার কথা সরকারকে।এই দুইটি ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে ১৩ হাজার কুইন্টাল যার বাজার মূল্য সাড়ে চার কোটি টাকার ধান নেয় এই রাইস মিল। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী তারা সরকারকে চাল দিচ্ছিল না। দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল এই টালবাহানা। অবশেষে খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের আধিকারিকরা এসে সিল করে দিল এই রাইস মিল। রাইস মিলের মালিকানায় যৌথ ভাবে রয়েছেন তিনজন। শীতল মোদি, সংগীতা আগারওয়াল, কিরণ দেবী আগারওয়াল। সূত্রের খবর সংগীতা আগরওয়াল এবং কিরণদেবি আগারওয়াল মালিকানা হস্তান্তর করে দিয়েছেন শীতল মোদির কাছে। কিন্তু কাগজপত্রের সমস্ত কাজ সম্পন্ন না হওয়াই তারা পুরোপুরি ভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাননি।এদিকে শীতল মোদীর পরিবারের লোক বিজয় মোদি ওরফে (বাবলু) স্বাক্ষর এবং কাগজপত্র জালিয়াতি করে দীর্ঘদিন ধরেই মিলের কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের কাছে বর্তমানে অভিযুক্ত চারজনেই। প্রশ্ন উঠছে সংগীতা আগরওয়াল এবং কিরণ দেবী আগরওয়ালজালিয়াতির কথা জানার পরেও কেন মালিকানা হস্তান্তর করার ক্ষেত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন। সরকারের কাছ থেকে এই রাইস মিল ১৩ হাজার কুইন্টাল ধান ক্রয় করে। তবে এতদিন ধরে বেনিয়ম চলার পরেও প্রশাসন পদক্ষেপ নিতে এত দেরি করল কেন সেই নিয়েও থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন। বিজেপি এবং সিপিআইএমের দাবি এই কোটি কোটি টাকা তছরূপের পিছনে শাসকদলের মদত রয়েছে। মদত রয়েছে প্রশাসনের একাংশের। না তো দীর্ঘদিন ধরে তারা কি ভাবে এই দুর্নীতি চালিয়ে যেতে পারলো। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে বিরোধীরা। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। যদি শাসলদলের কেউ যুক্ত থাকে সে ছাড় পাবে না। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর। জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর সিপিআইএম পার্টি অফিসের ইনচার্জ অনুপ আচার্য বলেন,খাদ্য সরবরাহ দপ্তর এসে মিল বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল এতদিন ধরে যে দুর্নীতি চলল সেটা কাদের মদতে। আমরা মনে করি এর পেছনে তৃণমূলের নেতা এবং প্রশাসনের একাংশ রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে রহস্য উন্মোচন করতে হবে।উত্তর মালদা জেলা বিজেপির সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানায়। কিন্তু সঠিক তদন্ত করে সবটা বের করা হোক। এর পেছনে কারা জড়িত রয়েছে কাদের মদত রয়েছে সব সামনে আসা দরকার। এত সহজে তো আর কোটি কোটি টাকা তছরূপ হতে পারে না।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১(বি)- ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, ঘটনাটা আমি শুনতে পেয়েছি। সরকারের টাকা নয় ছয় করার অধিকার কারোর নেই। এর সঙ্গে যারাই যুক্ত থাকবে প্রশাসন তাদের শাস্তি দেবে। কোন রকম রাজনীতি দেখা হবে না।
জেলাশাসক নিতীন সিংহানিয়া বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আইনানুগ ভাবে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে দুর্নীতি হচ্ছে এর আগে বারবার অভিযোগ জানিয়েছে চাষিরা। এবার সামনে এলো রাইস মিলের এতো বড়ো দুর্নীতি।এর আগে বারবার সামনে এসেছে রাজনৈতিক নেতাদের দুর্নীতি। সরকারের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন ঘটনায়। কিন্তু এবার কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। যদিও এই ঘটনাতেও লেগে গেছে রাজনৈতিক রঙ। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের মাধ্যমে সমস্ত দুর্নীতির উন্মোচন হয় কি না সেটাই দেখার বিষয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments