ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গে ফের পথে নামতে চলেছে দোতলা বাস। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা। সেপ্টেম্বর মাসে সপ্তাহে অন্তত দু’দিন এই দোতলা বাস চলবে। তবে রুট কী হবে, তা চূড়ান্ত হবে বোর্ড মিটিংয়ে৷ উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘আগামী ২ সেপ্টেম্বর পরিবহণ ভবনে বোর্ড মিটিং হবে। আপাতত সপ্তাহে দু’দিন এই দোতলা বাস চালানো হবে। সংস্থার ‘সবুজের পথে হাতছানি’ প্রকল্পে এই বাস পথে নামলে, তা আকর্ষণীয় হবে৷ বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করে কোন রুটে কী কী বার দোতলা বাস চলবে, তা চূড়ান্ত করা হবে।’
কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই বাসটি, যা দেখতে অনেকটা দ্বিতল বাড়ির মতো৷ দ্বিতলে বসে যাতায়াতের আলাদা অনুভূতি পেতেন যাত্রীরা৷ এই বাস ছিল সংস্থার অন্যতম আকর্ষণ। সত্তরের দশকে সংস্থার কাছে ছিল চারটি এমন দোতলা বাস। পরে দু’টি বাস অকেজো হয়ে যায়। এর পর প্রায় দুই দশক দু’টি বাস কোচবিহার থেকে পুন্ডিবাড়ি ও তুফানগঞ্জ রুটে চলতে দেখা গিয়েছে। তবে বছর দুয়েক আগে একটি বাসকে পর্যটনে ব্যবহার করে ‘সবুজের পথে হাতছানি’ প্রকল্পেও কাজে লাগানো হয়েছিল। বাসের গায়ে লাগানো হয়েছিল উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছবি ও রাজআমলের কোচবিহারের স্থাপত্যের ছবি৷
ডুয়ার্সে পর্যটকদের ঘোরার এক নতুন দিগন্ত, ২৮ শে আগস্ট থেকে চালু হচ্ছে ‘ভিস্টাডোম’
নিউজ ডেস্ক:
অত্যাধুনিক ট্রেন চালু হচ্ছে এবার ডুয়ার্স ভ্রমণের জন্য। যার পোশাকি নাম ‘ ভিস্টাডোম’। আগামী শনিবার ২৮শে আগস্ট সকাল ৭ টা ২০ তে শিলিগুড়ি এনজিপি স্টেশন থেকে ছাড়বে এই ট্রেন। আলিপুরদুয়ার জংশন এসে পৌঁছাবে দুপুর ১টায়। অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৬ ঘন্টা সময় লাগবে।
এই ট্রেনে বসে এনজেপি থেকে সেবক, মালবাজার, চালসা হয়ে পাহাড়ের গা ঘেঁষে ডুয়ার্সের চা বাগানের অপরূপ সৌন্দর্যের হাতছানি পাবেন ভ্রমণপিপাসুরা। সবমিলিয়ে, ডুয়ার্স ভ্রমণের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে। রেল সূত্রে খবর, অত্যাধুনিক কোচবিশিষ্ট স্পেশাল টুরিস্ট ট্রেন ‘ভিস্টাডোম’ এনজেপি জংশন থেকে আলিপুরদুয়ার জংশন পর্যন্ত চলবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক গুণীত কৌর বলেন, ‘আপাতত সপ্তাহে তিন দিন- শুক্র, শনি ও রবিবার আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে ভিস্টা ডোম ট্রেনটি চলবে। আলিপুরদুয়ার জেলার রাজাভাতখাওয়া, কালচিনি, হাসিমারা, মাদারিহাট, চালসা, সেবক, গুলমা হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত চলবে এই ট্রেন।’ সুদৃশ্য এই ট্রেনের ভিতরেও অত্যাধুনিক ব্যবস্থা আছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহের পারদ বাড়ছে। কাচের বড় বড় জানালা রয়েছে। যাতে ট্রেনের যাত্রাপথেই ডুয়ার্সের জঙ্গল-পাহাড়-চা বাগানের সৌন্দর্য আরও ভালোভাবে উপভোগ করতে পারেন পর্যটকেরা। এছাড়া ভিস্টা ডোমে ১৮০ ডিগ্রি রিভলভিং চেয়ার রাখা হয়েছে। যাতে পর্যটকেরা একদিকে চেয়ারে বসেই অন্যদিকের জানলা দিয়ে বাইরের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করতে পারবেন।
এই ট্রেন চালু হলে একদিকে যেমন ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসা ফের উন্নতির দিকে যাবে, তেমনই রেলের আয় বাড়বে বলেও মনে করছেন অনেকেই।পাহাড়-সহ ডুয়ার্সের বাসিন্দাদের অন্যতম জীবিকা হল পর্যটন ব্যবসা। বিগত প্রায় দু’বছর ধরে করোনা মহামারীর জেরে ডুয়ার্সের পর্যটন স্তব্ধ। সেখানে পর্যটকদের দেখা নেই বললেই চলে।
অত্যাধুনিক ভিস্টাডোম ট্রেন চালু হলে ডুয়ার্সে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে বলে আশাবাদী সেখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। রেলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ী অয়ন নাইডু বলেন, “স্তব্ধ হয়ে যাওয়া ডুয়ার্সের পর্যটন এই নতুন অত্যাধুনিক ট্রেনের মাধ্যমে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে। এর ফলে পর্যটকরা ডুয়ার্সের প্রতি আরো বেশি আকৃষ্ট হবে।”