দু’বছর পর ফের নীলাচল পুরীতে রথযাত্রার মতোই উল্টোরথ উৎসব ঘিরেও কয়েক লক্ষ মানুষের জমায়েতকে কেন্দ্র করে জনবিস্ফোরণ ঘটেছে। কিন্তু গোটা দেশের মতোই ওড়িশার পুরীতেও কোভিড সংক্রমণ বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন মন্দির কর্তৃপক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু শুক্রবার গুন্ডিচা মাসীবাড়ির ভিতর থেকে শুরু করে বাইরে রাজপথে লক্ষ লক্ষ মানুষের স্রোত দেখে স্পষ্ট বোঝা গেল না, কোডিড নিয়ে আদৌ কিছু গুরুত্ব দিচ্ছে কি না। কারণ, ডিউটিতে থাকা হাজার চারেক পুলিশ থেকে শুরু করে মন্দিরের সেবায়েত, পুরোহিত এবং তীর্থযাত্রীদের কারও মুখে মাস্ক নেই।
স্বর্গদার থেকে ভিআইপি রোড, যেখানে গিয়েছি, অটোচালক থেকে দোকানী কেউই মাস্ক পড়ছেন না। পুরো মাস্কহীন তীর্থনগরী। অথচ, ভুবনেশ্বর বিমানবন্দর, পুরী স্টেশন এবং কালেক্টরেট অফিসে মাস্ক পরার জন্য কড়া বার্তা দেওয়া হচ্ছে। একমাত্র উদ্বেগ দেখলাম, পুরীর নতুন কালেক্টরেট সামর্থ ভাবনার চোখে মুখে। বিকেল চারটায় গুন্ডিচা মন্দিরের দর্শন বন্ধ হওয়ায় কিছু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন।
আসলে অন্য বছর রাত দশটায় জগন্নাথ দর্শন বন্ধ হলেও এবার বিকেলেই তা হয়েছে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে। এখানেই শেষ নয়, আজ অত্যাধিক ভিড় সামলাতে উল্টোরথ যাত্রা ও কাল সোনাবেশ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শুরু হবে। রথের পর উল্টোরথ ঘিরে লক্ষ লক্ষ মানুষ নীলাচলে পা রাখায় খুশি হোটেল মালিক, কর্মী থেকে শুরু করে অটোচালকরা। কারণ, দুবছর ব্যাবসা বন্ধ ছিল। কিন্তু তিন বছর আগে পুরীর মূল মন্দিরের সামনে যে সমস্ত জায়গায় দোকান, আস্তানা ছিল।সেগুলি সব গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বদলে গিয়েছে গোটা এলাকা। তাই সোনাবেশ মুহূর্তে যে চাতালে দাঁড়িয়ে ভিআইপিরাও জগন্নাথ দেবের রাজবেশ দর্শন করতেন সেই চাতালটি আর নেই। স্বাভাবিকভাবে এবার ওড়িশা ও বাংলা, দুই রাজ্যের ভিভিআইপিরা কোথায় কিভাবে দাঁড়িয়ে রাজবেশ দেখবেন তা নিয়ে উল্টোরথের আগের রাতে জোর চর্চা চলছে। অন্য বছরের মতো এবার শুক্রবার বিকেলেই পুরী পৌঁছে গিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, বিধায়ক দেবব্রত মজুমদারের মত বহু জগন্নাথভক্ত। কিন্তু সবাই এবারের জনবিস্ফোরনের ভয়ে কিছুটা ভয়ে আছেন। সবারই মনে প্রশ্ন, কিভাবে রথের দড়ি টানা যাবে ? কোন পথে এবার সোনাবেশ দর্শন হবে। তবে সবার বিশ্বাস, জগন্নাথদেব চাইলে তবেই সব মনোবাসনা পূর্ন হবে। নয়তো নয়।