পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাম আমলের দুর্নীতি নিয়ে সরব শাসকদল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে দলীয় জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চ্যাটার্জি। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাম আমলের নিয়োগ নিয়ে কার্যত বোমা ফাটালেন প্রাক্তন সিপিএম নেতা। তিনি বলেন, “বাম আমলে পার্টির সুপারিশে চাকরি পেয়েছেন অনেকেই। আমি নিজে সেই সময়ে তাঁর সাক্ষী ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “বাম আমলে কিভাবে চাকরি হয়েছে, তা আমার থেকে ভালো কেউ আর জানেনা। তৎকালীন সিপিএম পার্টি সিদ্ধান্ত করে যে তালিকা পাঠাত, সেই সুপারিশ মেনে নিতে বাধ্য হতো স্কুলের পরিচালন সমিতি। এই ভাবে কয়েক হাজার লোকের চাকরি দিয়েছে সিপিএম নেতারা। এই অনৈতিক কাজে আমাকেও শরিক হতে হয়েছে। যেহেতু পার্টির সিদ্ধান্ত ছিল সেহেতু এই নিয়ে তখন আর কিছু বলতে পারিনি। এখন বলতে বাধ্য হচ্ছি।সিপিএম তুমি আজকে সাধু হয়েছে, আমরা সবাই চোর।সিপিএমের নেতাদের এমন একটা হাবভাব যেন তাঁদের সময়ে কেউ চাকরি পায়নি।”
এরপরই নিজের পুরনো দল সম্পর্কে হুঁশিয়ারির সুর শোনা যায় তৃণমূলের এই বিধায়কের গলায়। তাপস বলেন,“আমি মুখ খুললে সিপিএমেরই সমস্যা হবে। অনেক কিছুই জানি। শুধু চিরকুটে কেন!অনেক ক্ষেত্রে পার্টির সুপারিশেও চাকরি হয়েছে। আমি কাউকে সুপারিশ না করলেও তখন বিষয়টি সাধারণ হিসেবেই নিয়েছিলাম।এই নিয়ে কখনও সেভাবে ভাবেনি।আমার বিধানসভা এলাকা রাজারহাট-নিউটাউনে কারা কারা চাকরি পেয়েছে তাঁদের নাম ধরে বলে দিতে পারি! কিন্তু,এখনই তা প্রকাশ্যে আনছি না।সিপিএমের কাউকে ব্যাক্তিগত আক্রমণও করতে চাইছি না।তবে,মুখ্যমন্ত্রী যদি কখনও জানতে চাই,তখন তাঁকে সব জানাব।”
অন্যদিকে, বাম আমলে চাকরিতে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে পাল্টা তাপস চ্যাটার্জিকেই নিশানা করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃনাল চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “উদয়ন গুহ কিংবা তাপস চট্টোপাধ্যায়ের মতো লোকেরা আসলে কুলাঙ্গার। তৃণমূলের এত দৈন্যদশা, দলত্যাগী বিশ্বাসঘাতক তাপস চট্টোপাধ্যায়, উদয়ন গুহ’র মতো লোকেদের নামাতে হচ্ছে নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে।আমাদের একটাই কথা বাম আমলের নিয়োগ নিয়ে যদি এত অভিযোগ থাকে তাহলে তৃণমূল আদালতে যাচ্ছে না কেন? বাম আমলে এসএসসি-র মাধ্যমে নিয়মিত পরীক্ষা হত। চাকরি পেতেন যোগ্যরা। এখন টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি হচ্ছে। এটাই শুধু তফাৎ। তৃণমূল ডুবন্ত জাহাজ। সেই ডুবন্ত জাহাজকে বাঁচাতে আসরে নেমেছেন দলত্যাগী ওই সব কুলাঙ্গাররা। মানুষ সবকিছু দেখছে। এসব চিরকুট দেখিয়ে কোনও লাভ হবেনা।”