সুপ্রিম নির্দেশে রাজ্যের স্বস্তি, ‘অতিরিক্ত শূন্যপদ’ তৈরিতে রইল না বাধা
কলকাতা ব্যুরো : অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির মামলায় স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার। আজ, মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সুপারনিউমেরারি (অতিরিক্ত শূন্যপদ) তৈরিতে হস্তক্ষেপ করবে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে রাজ্যপালের অনুমোদনও নেওয়া হয়েছিল। ফলে আদালতের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের আর প্রয়োজন নেই।
২০২২ সালে এসএসসিতে নিয়োগের জন্য প্রায় ৬ হাজার অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার। রাজ্য মন্ত্রীসভার অনুমোদনের পর এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের এই অনুমোদন বাতিল করে দিয়েছিল। হাইকোর্টের যুক্তি ছিল, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। মহামান্য হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত বাতিলের পাশাপাশি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। প্রয়োজনে সিবিআই মন্ত্রীসভার সদস্যদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে বলে রায় দিয়েছিল আদালত। সেই রায়ের উপরই সুপ্রিম কোর্ট আগেই স্থগিতাদেশ দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে কিছু ‘অযোগ্য’দের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্যের শিক্ষা দফতর প্রায় ৬ হাজারের মতো অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। এবং রাজ্যমন্ত্রীর সভার বৈঠকেও এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপরই অভিযোগ ওঠে ‘অযোগ্য’-দের বাঁচাতে রাজ্যসরকার সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করেছিল। কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রীসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। যদিও তার আগে একক বেঞ্চের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেখানে বিচারপতি দেবাংশ বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের আবেদন শোনা হয়। সেখানেও ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করে দিয়েছিল, অতিরিক্ত শূন্যপদ গঠনের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। এবং প্রয়োজনে মন্ত্রীসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে রায় দিয়েছিলেন।
এরপরই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। সেই সময় সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ সুপারনিউমেরারি পদ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। আজ, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ পুরোপুরি খারিজ করে দিলেন।