মালদহ: রাস্তা দিয়ে তারস্বরে ডিজে বাজিয়ে যাচ্ছিল পিকনিক ফেরত একদল যুবক। সেই সময় ডিজে বাজানোর প্রতিবাদ করেন গ্রামেরই এক তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত উপপ্রধান। তা নিয়ে শুরু হয় বচসা। তার জেরে প্রতিবাদী ওই তৃণমূল নেতাকে বাঁশ, রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তৃণমূল নেতার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটে মালদহের মোথাবাড়ি থানার বাবলা কমলপুর এলাকার পাঠানপাড়ায়।
নিহতের নাম আফজাল মোমিন। ষাটোর্ধ্ব ওই ব্যক্তি তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত। বাবলা কমলপুর এলাকার পাঠানপাড়ার কয়েকজন যুবক অন্য কোনও জায়গা থেকে পিকনিক সেরে ডিজে বাজিয়ে ফিরছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধেয় উচ্চস্বরে ডিজে বাজিয়ে গ্রামে ফিরছিল পিকনিক সেরে আসা বেশ কয়েকজন যুবক। বাড়ি থেকে বেরিয়ে ডিজে বন্ধ রাখতে অনুরোধ করেন তৃণমূল নেতা আফজাল মোমিন। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন বাসিন্দা বাড়ি থেকে বেরিয়ে মত্ত যুবকদের একই অনুরোধ করেন। ডিজের শব্দ কমানোর জন্য যুবকদের কাছে অনুরোধ করা হয়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই যুবকরা উলটে ডিজের শব্দ আরও বাড়িয়ে দেয়। গানের তালে মত্ত অবস্থায় নাচানাচি শুরু করে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক শেখ বলেন, “আফজাল মোমিন-সহ বেশ কিছু গ্রামবাসী প্রতিবাদ করেন। ওই যুবকরা তখন বাড়ি চলে যায়। কিছুক্ষণ পর তারা বাঁশ, ব্যাট, রড নিয়ে এসে আফজালের বাড়িতে হামলা চালায়। পিকনিকের গাড়ির চালক-সহ ১৭-১৮ জন মিলে তাঁকে নির্মম ও নৃশংসভাবে পিটিয়ে মারে।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আফজাল। গ্রামবাসীরা তাঁকে তৎক্ষণাৎ মোথাবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান মোথাবাড়ি থানার পুলিশ। এই ঘটনায় মোথাবাড়ির বাবলা কমলপুর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। উত্তেজনা তৈরি হয়। নিহত আফজালের পরিবারের পক্ষ থেকে মোথাবাড়ি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মামুন শেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মামুন-সহ মোট ১৫ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে। দোষীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও তাদের চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছে নিহত আফজাল মোমিনের পরিবার। তৃণমূল জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি বলেন, “পুলিশ আইন মেনে কাজ করছে। অপরাধীদের চরম শাস্তি হবে।”