বিচারপতিদের সম্পত্তির হিসেব প্রকাশ করল শীর্ষ আদালত, প্রধান বিচারপতির রয়েছে কোটি টাকার সম্পত্তি
কলকাতা ব্যুরো : সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না-সহ বাকি বিচারপতিদের সম্পত্তির হিসেব দিতে শুরু করেছে শীর্ষ আদালত। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের মোট ৩৩ জন বিচারপতির মধ্যে ২১ জন বিচারপতির সম্পত্তির হিসেব শীর্ষ আদালতের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। হিসেবে দেখা গিয়েছে, প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেশ কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে।
কিছুদিন আগেই দিল্লি হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবনে প্রচুর নগদ অর্থ উদ্ধার হয়েছিল। যা নিয়ে গোটা দেশে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা জোরদার করতে উদ্যোগী হয়েছিল শীর্ষ আদালত। গত ১ এপ্রিল শীর্ষ আদালতের সমস্ত বিচারকদের উপস্থিতিতে (ফুল কোর্ট) এক বৈঠক হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সম্পত্তির হিসেব প্রকাশ্যে আনা হবে। সেই মতই শীর্ষ আদালতের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হতে শুরু করেছে বিচারকদের সম্পত্তির হিসেব।
দেখা গিয়েছে, শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার পিপিএফ (১ কোটি ৬ লক্ষ ৮৬ হাজার) এবং জিপিএফ (১ কোটি ৭৭ লক্ষ ৮৯ হাজার) অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা রয়েছে। এছাড়া একটি মারুতি সুফইট গাড়ি রয়েছে তাঁর। দিল্লিতে একটি তিন বেডরুমের এবং একটি চার বেডরুমের ফ্ল্যাট রয়েছে।
সেই তুলনায় হবু প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের নগদ অর্থের পরিমান অনেকটাই কম। বিচারপতি গবইয়ের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ২০ লক্ষ টাকার মতো রয়েছে। এছাড়া পিপিএফ (৬ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬৯২ টাকা) এবং জিপিএফ (৩৫ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭৩৬ টাকা) মিলিয়ে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি রয়েছে। বিচারপতি গবইয়ের মহারাষ্ট্রে একটি পৈতৃক বাড়ি রয়েছে। এছাড়া মুম্বইয়ের বান্দ্রায় এবং নয়াদিল্লিতে ফ্ল্যাট রয়েছে। মহারাষ্ট্রে তিনটি চাষের জমি রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে বিচারপতিদের সম্পত্তির পরিমাণ প্রকাশ্যে আনা হত না। ১৯৯৭ সালে শীর্ষ আদালতে ফুল কোর্ট বৈঠক হয়েছিল। বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, বিচারপতিরা তাঁদের সম্পত্তির হিসেব প্রধান বিচারপতির কাছে জমা দেবেন। তবে তা প্রকাশ্যে আনা বাধ্যতামূলক ছিল না। যদিও ২০০৯ সালে এক ফুল-কোর্ট বৈঠকে বলা হয়েছিল, যদি কোনও বিচারপতি তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রকাশ্যে আনতে চান, তিনি তা করতে পারবেন। যদিও ২০১৮ সালে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কারণ দেখিয়ে বিচারপতিদের সম্পত্তির পরিমাণ প্রকাশ্যে আনা হয়নি। পরে অবশ্য ২০১৯ সালে শীর্ষ আদালত এক মামলায় জানিয়েছিল, বিচারপতিদের সম্পত্তির পরিমাণ ব্যক্তিগত তথ্যের মধ্যে পরে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *