দিনহাটা:
দিনহাটা মহকুমার সীমান্ত লাগোয়া বামনহাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা, ডাক্তারের অভাব। হতাশাজনক চিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন হাসপাতালে আসা রোগীর পরিবার। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হওয়ার আবেদন কর্তৃপক্ষের।
দিনহাটার বামন হাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলেই আপনার চোখে পড়বে আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নোংরা আবর্জনা। পাশাপাশি আউটডোরের ঘর গুলির বেহাল দশা। যেখানে ডাক্তার বসে রোগী দেখছেন, তার ঠিক উপরেই বিভিন্ন জায়গায় দেওয়াল খসে পড়েছে, গ্রিলে ধরেছে জং। চোখের ডাক্তারের ঘরে অল্প বৃষ্টি হলেই জমে যায় প্রচুর জল। সেখানে বসেই রোগী দেখেন তিনি। আউটডোরের বাইরে বসার জায়গাটিরও বেহাল অবস্থা। মাথার উপরে শেড এর টিন ভেঙে গেছে, তাই বৃষ্টি হলে সেখানে বসার কোন উপায় নেই। পাশাপাশি হাসপাতালের পাশেই একটি অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন থেকে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে, এমন ছবি দেখা গেছে। হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের পাশাপাশি এই পরিকাঠামো গত বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।
কোথাও পড়ে আছে উচ্ছিষ্ট ভাত, তো কোথাও পানের পিক। এমনকি, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দেওয়ালগুলি পর্যন্ত ভরে উঠেছে গুটকার দাগে। দেখলে মনে হয় যেন এটি একটি আস্ত ডাস্টবিন। ছিঃ নোংরা।
অথচ, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চোখে পড়ার মত পোস্টার লাগানো রয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীদের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য তাঁরা সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে কিছুতেই কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি তারাও জানাচ্ছেন হাসপাতালের কিছু পরিকাঠামগত উন্নয়ন দরকার।
এ বিষয়ে বামন হাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাক্তার শান্তনীল দত্ত বলেন, আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করি। ওপিডি ইনডোর সব জায়গাতেই পোস্টারিং করা রয়েছে, তবুও কিছু মানুষ অসচেতন।
হাসপাতালে বেহাল দশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল আউটডোর অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া। ফান্ডের অভাবে পরিকাঠামো গত উন্নয়ন হচ্ছে না। ফান্ডের সমস্যার জন্যই অনেক কাজ আটকে আছে। কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী পরিদর্শন করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন হাসপাতালে ডাক্তারেরও অভাব রয়েছে। ৭ জন ডাক্তার প্রয়োজন তার মধ্যে রয়েছে চারজন। হাসপাতালে পড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্স প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি আমাদের নিজস্ব না। বর্ডারের ফান্ড থেকে এটি দেওয়া হয়েছিল। মেইনটেইন করার জন্য যে টাকা সেটা কেউ দেয়নি।
হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসা মহিলা আলেয়া বিবি, রোগীর আত্মীয় স্বপ্না বর্মন জানান, হাসপাতালের অবস্থা খারাপ। বসার জায়গা ভাঙ্গা, টিন ভাঙ্গা বৃষ্টি পড়ে গা ভিজে যায়। মশা মাছির উপদ্রব আছে। হাসপাতালের উন্নয়ন চাই।