পাঠকের কলমে, অজয় রায়:

জিতি নাগরাকাটা ব্লকের জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্ভুক্ত। এই এলাকটি একেবারেই ভুটানের সাথে লাগোয়া। নাগরাকাটা থেকে ১৮ কিমি। নাগরাকাটা থেকে চম্পাগুড়ি হয়ে সোজা “নয়া সাইলি” চা বাগানের বুক চিঁড়ে চলতে থাকা। পুরো রাস্তা দুপাশে চা বাগানের সবুজ গালিচার মধ্য দিয়ে পথ সত্যি মনে হবে এক অন্য জগতে উপস্থিত। চারিদিকে সবুজ আর সবুজ সাথে চায়ের সদ্য বেরানো কচি পাতায় তাক ঝাঁক। কচি সবুজ চা পাতা গুলি জলের ফোঁয়ারাতে যেন কচি কাঁচাদের মতো মজা করছে। শান্ত ঠান্ডা হিমেল বাতাসে চা বাগানের ভিতরে সারি সারি শিরিস গাছ গুলি হাত পাখার মতো করে তাদের হাওয়া দিচ্ছে। প্রখর রোদে, বৃষ্টি, হাওয়ার তাদের রক্ষা করছে কবজের মতো। বাগানের ভিতরে চওড়া পাঁকা চড়াই উতরাই এর মধ্যে দিয়ে পাশের “হোপ” চা বাগানের প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ। কি সুন্দর আর সুন্দর।

হৃদ জুরানো এই পরিবেশের মধ্যে হারিয়ে যেতে মন করবে। পাশেই পাহাড়ের চূড়ার মধ্যে থাকা চা গাছ গুলি যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। “হোপ” চা বাগান কে বাঁ পাশে ফেলে উতরাই রাস্তায় দিয়ে নেমে গিয়েই SSB (সশস্ত্র সীমা বল) কেম্পে নিজের পরিচয় নথি করাতে হয় এবং কি কাজে আসা সেটা বলতে হয় তারা এন্টি করেই আপনাকে ছেড়ে দিবে। ভুটান ও নেপাল সীমার সুরক্ষার দায়িত্বে এদের মোতায়েন করেছে ভারত সরকার। যাই হোক, এন্টি করেই জিতি চা বাগানের চড়াই উতরাই পথে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে করতে পৌছে যাওয়া বর্ডার নামক শেষ স্থানে এখানেই গাড়ি শেষ পয়েন্ট। এখান থেকে মাত্র ৪০০ মিটারের ভুটানের আর ভারতের সীমা। গোগো ল্যান্ড গ্রামের উপর দিয়ে পায়ে এই বর্ডারে বসে সাপ্তাহিক হাট। এখানে ভারত সীমান্তের ভিতরেই আছে বড় বড় মুদি দোকান থেকে সকল দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হওয়া সকল জিনিসের দোকান যা বর্ডার মার্কেট নামেই পরিচিত। “জিতি” ভুটান পাদদেশের এক

“জিতি” ভুটান পাদদেশের এক ডুয়ার্সের অনবদ্য অফবিট গন্তব্য ! জানুন

এই বাজারটি ভুটিয়া দের উপর নির্ভরশীল। শীতে প্রচুর ভুটানের কমলা লেবু কেনা বেচা হয়। নাগরাকাটা ও তার বাইবের এলাকা গুলি থেকে পাইকার এখান থেকে কমলালেবু, কুয়াস,আদা কিনে নিয়ে যায়। এখানে ভুটানের পাশের গ্রামের মানুষেরা আসে হাটে জিনিস নিতে। আপনিও এক পা ভুটানে এবং এক পা ভারতের রেখে দেখতে পারেন। মধ্যে খানে নেই কোন কাঁটা তারের বেড়া। আপনি ভুটানের সীমানায় থাকা দোকানে গিয়ে চা, নুডুলস্, ঠান্ডা খেতে পারবেন, যদি ভারতে ঠান্ডার দাম ১০ টাকা হলে নাগের ডগার মানে এক পায়ের দূরত্বেই ভুটানে আপনি সেম ঠান্ডাই পেয়ে যাবেন ৭ টাকায়। পাশেই ভুটান দেশের পাঁকা রাস্তা। এটি সিপচু ভুটান।ভুটানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং নৈসর্গিক মনোরম পরিবেশে আপনার হৃদয়ে এনে দেবে এক অসীম তৃপ্তি। জিতি বাগানের কিছুটা দুরেই রয়েছে ভুটানের থেকে আসা “থাল খোলা”। ভুটান পাহাডের কোল থেকে নেমে আসা এই ছোট্ট খোলার ঝিরি ঝিরি ধারায় বেয়ে চলেছে ।

More News- ডুয়ার্সের খুট্টিমারি জঙ্গল পর্যটকদের ভবিষ্যতের অফবিট গন্তব্য!

আপনারা এখানে নিজের গাড়িতে বা নাগরাকাটা চৌপথি থেকে মারুরি ভেনে বা অন্যান্য ছোটো গাড়িতে চেপে অন্যান্য স্থানীয় পেসেঞ্জারদের মতো পৌঁছাতে পারেন এখানে। ভারত ও ভুটান সীমান্তের এই “জিতি” হতে পারে আপনার ডুয়ার্সের অফবিট গন্তব্য।

কলমে অজয় রায় 🖊️

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *