পাঠকের কলমে অজয় রায় – “গোঠ” এই শব্দটি ডুয়ার্স এবং পাহাড়ের একটি পরিচিত শব্দ। “গোঠ” বলতে মূলত বোঝায় গোচারণ ভূমি / গবাদি পশুর রাখবার স্থান । এই “গোঠ” কে কেন্দ্র করে জড়িয়ে আছে ডুয়ার্সে তথা পাহাড়ের অনেক মানুষের জীবন যাত্রা। পশুপালন এই অঞ্চলের অনেক মানুষের জীবিকা। গরম কালে বা খরার সময় পাহাড়ের সংলগ্ন বা পাহাড়ের পাদদেশ এলাকায় গবাদি পশুর ঘাসের এবং পানীয় জলের অভাব দেখা দিলে এই সেই অঞ্চলের মানুষেরা তাদের স্থায়ী ঘর- বাড়ি ছেড়ে নিচের দিকে চলে আসে যেখানে পশুদের পর্যাপ্ত ঘাস এবং জলের ব্যবস্থা থাকে এবং সেখানে তারা জংগলের কাঠ, লতা -পাতা,বাঁশ ও এক প্রকারের পাহাড়ি লম্বা লম্বা ঘাস দিয়ে তারা নিজের এবং পশুদের থাকবার মতো অস্থায়ী এক ঘর তৈরি করে এটাকেই “গোঠ” বলে।
তারা সেই অস্থায়ী গোঠে ততদিন থাকে যত দিন তাদের স্থায়ী এলাকা গুলিতে গবাদি পশুর পর্যাপ্ত ঘাস ও জলের পর্যাপ্ত সুবিধা না হয়। গবাদি পশু এবং তার মালিকরা গোঠেই পেতে নেয় এক ধরনের সংসার। পুরো দিন গোয়ালারা গবাদি পশুদের নিয়ে পাহাড় সংলগ্ন চারণভূমিতে নিয়ে যায় এবং সন্ধ্যায় তারা ফিরে আসে গোঠে। তারা গরুর প্রত্যেক দিনের দুধ সংগ্রহ করে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করে মাখন, ঘি ও ছুরপি। ছুরপি এক প্রকারে দুধকে জ্বাল দিয়ে তৈরি করা এক শক্ত জিনিস। যেটা মুখে দিয়ে চুসে চুসে খেতে হয়। এই ছুরপি তাদের এক প্রকারের জলের তৃষ্ণা মেটাতে সাহায্য করে।এই সমস্ত জিনিস গুলি তারা কাছের কোনো জনবহুল এলাকায় গিয়ে বিক্রি করে।