কোচবিহার:
আনুষ্ঠানিকভাবে রাস চক্র ঘুরিয়ে পুজো করে সর্বসাধারণের জন্য মদনমোহন মন্দির খুলে দেবেন কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান। আজ থেকে কোচবিহারের ঐতিহাসিক রাস মেলা শুরু হচ্ছে। তার আগে ইতিমধ্যেই কোচবিহার মদনমোহনবাড়ী চত্বর সেজে উঠেছে। জোর কদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। পাশাপাশি রাসমেলা মাঠে বিভিন্ন স্টল থেকে শুরু করে দোকান নাগরদোলা সহ বিভিন্ন মনোরঞ্জন এর প্রস্তুতি চলছে।
দীর্ঘ ২ বছর পর করো না আবহাওয়া কাটিয়ে এ বছর রাস মেলায় রেকর্ডসংখ্যক ভিড় হবে বলে মনে করছে কোচবিহার পৌরসভা। সকলকে সুস্থ ভাবে মেলা পরিক্রমার বার্তা দিয়েছে পৌরপিতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী এই মেলাকে কেন্দ্র করে জেলা জুড়ে খুশির হাওয়া বইছে। ১৮১২ সালে কোচবিহারের মহারাজা হরেন্দ্র নারায়ণ এই মেলার সূচনা করেন। কার্তিকী পূর্ণিমার এই তিথিতে তৎকালীন কোচবিহার রাজ্যের রাজধানী স্থানান্তর হয় ভেটাগুড়িতে। এই উপলক্ষে ওই গৃহ প্রবেশের দিন রাসযাত্রার আয়োজন হয়। সেই থেকে ঐতিহ্য পরম্পরা মেনে রাস উৎসব চলে আসছে। বর্তমানে এই রাসযাত্রার অনুষ্ঠান পরিচালনা করে কোচবিহার দেবত্র ট্রাষ্ট বোর্ড। মহারাজাদের মদনমোহনের রাসযাত্রা উপলক্ষে কোচবিহার শহরের একটা বড় অংশ জুড়ে আয়োজন হয় রাসমেলার। যা পরিচালনা করে থাকে কোচবিহার পৌরসভা।
রাজা না থাকলেও রাজ নিয়মেই পরিচালিত হয় এই উৎসব। রাসচক্র ঘুরিয়ে মহারাজারা এই মেলার সূচনা করতেন। আজও সেই নিয়মেই জেলা শাসক এই রাসযাত্রার সূচনা করেন। এইদিন জেলার শীর্ষ এই আধিকারিককে রাজ মর্যাদা দেওয়া হয়। ‘তিনি যেন একদিনের রাজা’।
জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বেশ কয়েক বছর ধরে এই পূজার শুভ উদ্বোধন করে আসছেন,তিনি বলেন,“আমি ভাগ্যবান যে এই পূজা করার সুযোগ পেয়েছি। কোচবিহারের মানুষের জন্য এই পূজা দিতে পারব, এই ভাবনাই আমাকে বেশ গর্বিত করে তুলেছে। ইতিমধ্যে দেবত্র ট্রাষ্ট বোর্ডের পুরোহিতদের সাথে কথা বলে পূজা বিধি জেনেছি আমি আশা করছি, এই পুজাতে যা নিয়ম আছে তা সঠিক ভাবেই পালন করতে পারব। প্রথা অনুযায়ী, গোটা দিন নির্জলা উপবাস থেকে সময় মেনে পূজা দিতে হয়। জেলা শাসক জানিয়েছেন, তিনি মানুষের শুভ কামনার জন্যে উপবাস করেই এই পূজায় বসেছেন।”