Saturday, April 20, 2024
Homeময়নাগুড়িআইন নিয়ে পড়তে চায়! একই গ্রামের দুই কৃতি ছাত্র আর্থিক অনটন,উচ্চশিক্ষায় বাধা

আইন নিয়ে পড়তে চায়! একই গ্রামের দুই কৃতি ছাত্র আর্থিক অনটন,উচ্চশিক্ষায় বাধা

ময়নাগুড়ি, ২১ জুন : উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একই গ্রাম থেকে দুই ছাত্র ভালো ফল করায় আশায় বুক বেঁধেছে পরিবারের সদস্যরা। আর্থিক অনটনের মুখে দাঁড়িয়ে পরিবারের সদস্যরা। ময়নাগুড়ি ব্লকের চুরা ভান্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝাঝাঙ্গি এলাকায় বাড়ি বিশ্বজিৎ মন্ডল ও শুভম মণ্ডলের। তারা দুজনেই আইন নিয়ে পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থকরী। তাই সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন উভয়ের পরিবার। ময়নাগুড়ি রথেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলের সেরা বিশ্বজিৎ মন্ডল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৬। বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে ৯০, শিক্ষাবিজ্ঞানে ৮৩,ভূগোলে ৮৭, সংস্কৃতে ৯৩ এবং শারীর শিক্ষায় ১০০ পেয়েছে। বিশ্বজিৎ পরবর্তীতে আইন নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। বিশ্বজিৎ জানায়," পরীক্ষা হিসেবে আরেকটু নম্বর পাওয়া উচিত ছিল। এই ফলাফলের জন্য বাবা-মা শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই আমাকে ভীষণ সাহায্য করেছে। আগামীতে আমি আইন নিয়ে পড়তে চাই।" এই অবস্থায় কিভাবে তার উচ্চশিক্ষা হবে তা নিয়ে চিন্তিত তার পরিবার। বিশ্বজিতের বাবা সুকুমার মন্ডল পেশায় একজন শ্রমিক। দিন এনে দিন খাওয়া পরিস্থিতিতে কীভাবে ছেলের উচ্চশিক্ষা করাবেন তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তিনি। তাই তিনি ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেন,"আমি শ্রমিকের কাজ করে যা উপার্জন হয় তা থেকেই সংসার চলে। অনেক সময় ছেলে টিউশন ফি দিতে পারতাম না। এখন ছেলেকে কিভাবে উচ্চশিক্ষা করাবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। যদি কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে উপকৃত হব।"

অন্যদিকে একই স্কুল ও একই গ্রাম থেকে ভালো ফল করেছে আরেক ছাত্র শুভম মণ্ডল। সেও আইন নিয়ে আগামীতে পড়াশোনা করতে চায়। শুভম উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৬৪ পেয়েছে। শুভম জানায়, অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হয়েছে তাকে। তাই আগ্রহ থাকলেও আইন নিয়ে পড়া কতটা পরিবারের পক্ষে সাধ্য হবে তা নিয়ে সুচিন্তিত। শুভম বলেন,”আগামীতে আইন নিয়ে পড়াশোনা করে ভালো উকিল হতে চাই। উকিল হয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমাজ সেবা করতে চাই।”শুভম এর বাবা শ্যামল মন্ডল পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। তার মা কল্পনা মন্ডল বাড়িতে বিড়ি তৈরি করেন। দুজনের উপার্জনেই চলে পরিবারের সমস্ত খরচ। নুন আনতে পানতা ফুরানোর অবস্থায় উচ্চশিক্ষায় চিন্তিত পরিবার। শুভম এর মা কল্পনা মন্ডল বলেন,”ছেলে ভালো ফল করায় আমরা খুশি। কিন্তু ও আইন নিয়ে পড়তে চায় এবং তা কিভাবে সম্ভব হবে বুঝতে পারছি না। আমি বাড়ির কাজ কর্ম এবং মাঝে মাঝে বিড়ি তৈরি করি। ওর বাবা ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করে যা উপার্জন করে পুরো টাকা সংসারের খরচ হয়ে যায়। এই অবস্থায় কিভাবে ছেলের উচ্চশিক্ষা করাব তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। কেউ যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে উপকৃত হব।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

More News

Recent Comments